বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও রেশন কার্ড এ দেশের। তাও আবার একটা-দুটো নয়, একেবারে ১৫টি। এবার এতগুলো রেশন কার্ড মিলল বর্ধমানের এক বিজেপি কর্মীর বাড়ি থেকে। সব ক’টি কার্ড বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত শুরু করেছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা। অভি়যুক্ত স্বপন সরকার নামে ওই বিজেপি কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, ‘স্বপন সরকার নামে ওই ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুদবুদ থানায় আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
বুদবুদ থানা এলাকার সুকান্ত নগরের বাসিন্দা স্বপন সরকার গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাংলাদেশে থাকা তাঁর ভাই-বোন, আত্মীয় মিলিয়ে মোট ১৫ জনের নামে এই দেশে তিনি রেশন কার্ড তৈরি করিয়েছিলেন। তাঁর নিজের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪। সব মিলিয়ে মোট ১৯টি কার্ড দিয়ে কয়েক বছর ধরে রেশন তুলে আসছিলেন এই বিজেপি কর্মী।
তবে গতকাল শেষরক্ষা হল না। বুধবার সকালে রেশন তোলার সময় গ্রামবাসী স্বপনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তারপরই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিড়ম্বনায় পড়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ–সভাপতি রমণ শর্মা বলেন, ‘দেখতে হবে স্বপনের পরিবারের লোকেরা এখানে বাস করছে নাকি তাঁরা আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’
অভিযোগ, স্বপন তাঁর রাজনৈতিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এই ১৯টি রেশন কার্ড তৈরি করেন। এর মধ্যে ১১টি আরকেএসওয়াই-২ কার্ড। বাকি ৮টি পিএইচএইচ কার্ড। প্রথম কার্ডগুলি রাজ্যের, দ্বিতীয় কার্ডগুলি কেন্দ্রের। কার্ডগুলো বুদবুদ অ্যামুনিশন ডিপো রাস্তায় ৫ নম্বর রেশন ডিলারের অধীন। বহুদিন ধরে এই কার্ডগুলো দিয়ে খাদ্যসামগ্রী তোলা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। এদিন সকালে এতগুলো কার্ডের বিনিময়ে প্রচুর পরিমাণে চাল-গম তোলার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্বপনকে। এভাবে দলীয় কর্মী রেশন দুর্নীতিতে ধরা পড়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছে বিজেপি।