করোনাভাইরাসের হানায় সারা বিশ্ব জুড়ে ত্রাহি ত্রাহি রব। ভাইরাসের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজছে মানুষ। এ রকম পরিস্থিতিতেই প্রাণীকুলের প্রতি মানুষের হিংস্র আচরণের ছবি ধরা পড়ল কেরালার। কিছু দিন আগে, সেখানে ফলের ভিতর বাজি পুরে খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল একটি গর্ভবতী হাতিকে। মুখের ভিতর সেই বাজি ফাটার পর কষ্ট পেতে পেতে অবশেষে মৃত্যু হয়েছে ওই হাতিটির। বনবিভাগের এক অফিসার হাতিটির ছবি সহ গোটা ঘটনার কথা শেয়ার করেছেন ফেসবুকে। তার পরই এই নৃশংস ঘটনা সামনে এসেছে।
সম্প্রতি করা ফেসবুক পোস্টে বনবিভাগের অফিসার মোহন কৃষ্ণণ মালয়লাম ভাষায় লিখেছেন, ‘‘সে মানুষকে বিশ্বাস করেছিল। আনারস খেতেই যখন বিস্ফোরণ হয়, তখনও নিজের কথা ভাবেনি সে। জন্ম দিতে চলা সন্তানের কথা ভেবেছিল। যন্ত্রণায় ছটফট করলেও এক জন মানুষেরও ক্ষতি করেনি হাতিটি। এটা বাড়ি ঘরও ভাঙেনি।’’
খাবারের খোঁজে হাতিটি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে এসেছিল। সেখানে রাস্তায় ঘুরে খাবারের খোঁজ করছিল সে। কিন্তু সে সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আনারস খেতে দেয় তাকে। সেই আনারসের মধ্যে ভর্তি ছিল পটকা-বাজি। বাজি ভর্তি আনারস খেতেই মুখের ভিতর ফেটে যায় বাজি। যার জেরে হাতিটির মুখ, পেট ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই যন্ত্রণা নিয়েই ভেলিয়ার নদীর ধারে পৌঁছয় সে। যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে নদীর জলেই শুঁড় ডুবিয়ে দাঁড়িয়েছিল। ক্ষতের জেরে সে খেতেও পারছিল না।
অফিসাররা জানিয়েছেন, বনবিভাগের কর্মীদের নিয়ে তিনি যখন ভেলিয়ার নদীর ধারে পৌঁছন তখন দেখেন, শুঁড় ডুবিয়ে দলের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে সে। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘‘অন্য হাতিদের নিয়ে এসে আমরা তাকে জল থেকে তুলে আনারও চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই জল থেকে তুলে আনা যায়নি তাকে। সে যে আর বাঁচবে না, এ কথা বোধহয় বুঝে গিয়েছিল। ২৭ মে বিকাল চারটে নাগাদ জলেই মৃত্যু হয় তার।’’