লকডাউনের জেরে ইতিমধ্যেই উবেরের মত আন্তর্জাতিক অ্যাপ ক্যাব সংস্থা মাত্র ৩ মিনিটের ভিডিও কলের মিটিংয়ে একধাক্কায় অনেক কর্মী ছাঁটাই করেছে। এবার সেভাবেই হঠাৎ করেই ৫০ সাংবাদিককে ছাঁটাই করল মাইক্রোসফট কোম্পানি। সেই জায়গায় রোবটদের কাজে নিয়োগ করল এই টেক জায়ান্ট সংস্থা। সংস্থার তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এবার থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে শুরু করে ছবি, খবরের শিরোনাম- এমনই যাবতীয় কাজ মাইক্রোসফটের এমএসএন ওয়েবসাইটে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে করা হবে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়ে থাকে, এত দিন সেই ভাবেই কাজ চালাচ্ছিল মাইক্রোসফট। অর্থাৎ বিভিন্ন এজেন্সি থেকে খবর সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে, সে সব খবরের শিরোনাম তৈরি করা, তাতে ছবি জুড়ে- যাবতীয় সব কাজই এতদিন ধরে করে আসছিলেন সাংবাদিকরা। সেই সাংবাদিকরাই এবার লকডাউনের মাঝে নিজেদের কাজ হারালেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের খপ্পরে। অর্থাৎ এবার আর সাংবাদিকদের প্রয়োজন নেই। পুরো বিষয়টাই হতে চলেছে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে।
কিন্তু কেন এমনতর পদক্ষেপ? মাইক্রোসফটের তরফে জানানো হয়েছে যে, ব্যবসার উন্নয়নমূলক পরিবর্তনের উদ্দেশেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তাদের তরফে। এদিনই একটি বিবৃতি জারি করে মাইক্রোসফট বলেছে, ‘দুনিয়ার যে কোনও প্রান্তের যে কোনও প্রতিষ্ঠানের মতো আমরাও আমাদের ব্যবসায় উন্নতি করার চেষ্টা করি। কখনও তা করতে গিয়ে অনেক অর্থ খরচ করতে হয়। কখনও আবার হয় না।’
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের খবর ইতিমধ্যেই ওই সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁরা নোটিশ পিরিওডে রয়েছেন। জুন মাসের শেষের দিকেই ওই ৫০ জন সাংবাদিক মাইক্রোসফটের চাকরি খোয়াবেন। যদিও ফুল টাইম কাজ করেন এমন একদল সাংবাদিককে সংস্থায় রেখে দিয়েছে মাইক্রোসফট।
কাজ হারিয়ে হতাশ এক সাংবাদিকের কথায়, ‘সবথেকে হতাশার বিষয়টি হল, মানুষের জায়গা এখন দখল করছে মেশিন। তবে এই মহামারী পরিস্থিতিতে এটাই বাস্তব। মেনে নেওয়া ছাড়া আর উপায় নেই।’ আর এক সাংবাদিক একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন। তাঁর কথায়, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কখনই সাংবাদিকতা হয় না। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সম্পাদকীয় নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমার মনে হয়, এর ফলে ফেক নিউজের রমরমার বাজারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সির দ্বারা ভুয়ো খবরের বাড়বাড়ন্ত আরও বাড়বে, কমবে না।’