তাঁকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে গিয়ে বাংলার সর্বনাশ করার চেষ্টা হচ্ছে৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে কেন্দ্র এবং রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে এ দিন এই মন্তব্যই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলায় করোনা সংক্রমণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাজনীতি হচ্ছে বলেও এ দিন অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘দুর্যোগ সামলাব নাকি আপনাদের রাজনীতি?’
এ দিন নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে আগাগোড়াই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেলের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর অভিযোগ, ‘রাজ্যের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই একতরফা ভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরত পাঠাচ্ছে রেল৷ যার ফলে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে৷ কারণ ইতিমধ্যেই যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরেছেন, তাঁদের অনেকের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে৷’ তাঁর অভিযোগ, ‘বাংলায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণেই ছিল৷ কিন্তু যেভাবে রাজ্যের পরামর্শ উপেক্ষা করেই একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ঢুকছে, তাতে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে৷’ রাজ্যের অবস্থা মুম্বই, দিল্লী, গুজরাতের মতোই করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা৷ এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধিই দেখছেন তিনি৷
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা আমাকে পলিটিক্যালি ডিস্টার্ব করতে গিয়ে বাংলার সর্বনাশ কেন করছে আমি জানি না৷ দুর্যোগ সামলাব, নাকি আপনাদের রাজনীতি সামলাব? আপনারা চান বাংলাটা মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লী হয়ে যাক৷ অন্য রাজ্যে যাঁরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের জন্য আমরা সমবেদনা জানাই৷ অন্য রাজ্যগুলির প্রতি আমাদের সহমর্মিতাও রয়েছে৷ আমরা এই পরিস্থিতিতে রাজনীতি চাই না৷’
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, মহারাষ্ট্র থেকে একসঙ্গে রাজ্যে প্রায় ৩৬টি ট্রেন পাঠানো হচ্ছে৷ এ বিষয়ে বাংলার সরকার তো বটেই, মহারাষ্ট্র সরকারও কিছু জানেনা বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুম্বই থেকে বের করে দিয়ে এখানে সংক্রমণ বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷’
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টই বলেন, যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরছেন, তাঁরা এ রাজ্যেরই বাসিন্দা৷ তাঁদের ফেরানো নিয়ে রাজ্যের কোনও আপত্তিও নেই৷ কিন্তু যেহেতু রাজ্য প্রশাসন এখন ঘূর্ণিঝড় উম্পুন পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যস্ত, তাই ধাপে ধাপে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য রেলকে অনুরোধ করেছিল৷ কিন্তু রেল তা শোনেনি৷ ফলে বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক একসঙ্গে এ রাজ্যে ঢুকলে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এই পরিস্থিতি আটকাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও দাবি করেন তিনি৷