শনিবার বেহালায় শিশুদের জন্য তাঁদের বাড়ি বাড়ি উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তিনি। কেন্দ্রের আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে তিনি বলেন, ’টিভিতে দেখছি, রোজই ঘোষণা হচ্ছে। শুনছি, কিন্তু মাথায় কিছু ঢুকছে না। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে যেটা বলেছিলেন সেটাই সত্যি।’ তাঁর মতে, ‘রাজ্যকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে প্রথম দিনই তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, এটা বিগ জিরো। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এই প্যাকেজ কীভাবে বিভিন্ন খাতে দেওয়া হবে তা ঘোষণা করার পর দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনও বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভাঁওতা। মানুষের কাছে কিছু পৌঁছবে না। করোনার জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পাননি। কিসের আর্থিক প্যাকেজ?’
এবার এ নিয়ে পার্থ বলেন, ‘কোথা থেকে যে টাকা আসছে, কীভাবে খরচ হচ্ছে, কার সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে কোনও কিছুই স্পষ্ট নয়। অবাক হচ্ছি আত্মনির্ভরশীলতার কথা বলা হচ্ছে! মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন, বাংলা যথেষ্ট আত্মনির্ভর। নিজেদের টাকায়, নিজেদের চেষ্টায় এখানে উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে। কারও দয়ার ওপর নির্ভর করতে হয় না।’
নির্মলা সীতারমণের বক্তব্য শুনে পার্থ বলেন, ‘জানি না আরও কতদিন এই প্যাকেজের ব্যাখ্যা শুনতে হবে। এই প্যাকেজ মানুষের কাজে লাগছে কই? আমি এটাই ভাবছি মানুষের টাকা মানুষকেই দিয়ে বলছে তোমাদের দিচ্ছি। আমার টাকা আমারই হাতে। কত দিলেন, কত পেলাম তার কোনও উল্লেখ নেই। সবটাই ধোঁয়াশা, সবটাই অস্পষ্ট। মনে হচ্ছে হিসেবের মারপ্যাঁচ। বাংলার অর্থমন্ত্রী প্রথম দিন ঠিকই বলেছিলেন। আসলে ৪.২ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘উনি বলেছিলেন, যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হল তার সত্যতা কোথায়? আরবিআই থেকে ৮ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে। যাঁরা একটু লেখাপড়া করেছেন তাঁরা বুঝতে পারবেন এই টাকা ২০ লক্ষ কোটির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আগে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে শুধু ১০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ। এর ঘোষণা আগেই হয়ে গিয়েছিল। এই ১০ লক্ষ কোটির মধ্যে সরকার ঋণ নিতে পারবে ৪.২ লক্ষ কোটি টাকা। এটা বিভ্রান্তিমূলক।’