করোনা ভাইরাসের ধাক্কা সামলে জার্মানিতে ফিরছে ফুটবল। ইউরোপের সেরা পাঁচটি লিগের মধ্যে অন্যতম বুন্দেশলিগা আজ ফের শুরু হচ্ছে। সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে লিগের বাকি ম্যাচগুলি আয়োজিত হবে। ইতিমধ্যেই লিগের প্রত্যেক দলের ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। পুনরায় ফুটবল শুরু করার বিষয়ে লিগ কমিটি প্রত্যেক দলের জন্য ৫২ পাতার নির্দেশিকা তৈরি করেছে।
করোনা সংক্রমণ রুখতে দু’দলের ফুটবলার, ম্যানেজার, সাপোর্ট স্টাফ, ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক, মাঠের কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী ও সাংবাদিক মিলিয়ে মাত্র ৩২২ জনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়ামে থাকার।
জানা গেছে ম্যাচের শুরু কিংবা শেষে কোনও সাংবাদিক বৈঠক হবে না। মিক্সড জোনে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তবে ম্যাচের পর টিভি সাংবাদিকদের জন্য সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু টিভি ক্যামেরা ও সংশ্লিষ্ট ফুটবলারের মধ্যে পাতলা স্ক্রিন থাকবে। গোলের পর ফুটবলাররা পায়ে পা ঠেকিয়ে কিংবা কনুইয়ের মাধ্যমে সেলিব্রেশন করতে পারবেন। খেলার আগে ও পরে দু’দলের ফুটবলাররা হাত মেলানো আপাতত বন্ধ। নিষেধ ম্যাচের আগে গ্রুপ ছবি তোলাও। তবে ফিফার নয়া নিয়ম মেনে পাঁচজন করে ফুটবলার পরিবর্তন করতে পারবে ক্লাবগুলি। লিগের ম্যাচ চলাকালীন প্রতি দু’সপ্তাহ অন্তর ফুটবলারদের মেডিক্যাল টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরমধ্যে যদি কোনও ফুটবলারের রিপোর্ট পজিটিভ বেরয় তবে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। পাশাপাশি গোটা দলকে ৯ দিনের জন্য থাকতে হবে কোয়ারেন্টাইনে। সেক্ষেত্রে সেই টিমের ভবিষ্যৎ কী তা অবশ্য পরিষ্কার করে বলা হয়নি। মাঠে দর্শক না থাকলেও, বেশ কিছু স্টেডিয়ামে অনুরাগীদের চিৎকারের কৃত্রিম শব্দ পরিবেশিত হবে।
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড বনাম এফসি শালকে মানেই ধুন্ধুমার দ্বৈরথ। বুন্দেশলিগার এই ডার্বি যখন বরুসিয়ার ঘরের মাঠে খেলা হয়, ডর্টমুন্ড শহরের ছবিটাই বদলে যায়।হলুদ-কালো জার্সি পরে, স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে, হাতে পতাকা নিয়ে সিগন্যাল ইদুনা পার্ক স্টেডিয়ামে সকাল থেকেই উৎসব শুরু করে দেন বরুসিয়া সমর্থকেরা। ৮১ হাজার ৩৬৫ জন দর্শক খেলা দেখতে পারেন স্টেডিয়ামে। গ্যালারির কিছু অংশে কোনও চেয়ার নেই। প্রায় আঠাশ হাজার দর্শক হলুদ-কালো জার্সি পরে পুরো ম্যাচটাই দাঁড়িয়ে দেখেন, গান গেয়ে ফুটবলারদের উৎসাহ দেন। সারা বিশ্বে যা পরিচিত ‘ইয়েলো ওয়াল’ নামে। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের ১১০ বছরের ইতিহাসে কখনও ফাঁকা থাকেনি গর্বের এই ‘ইয়েলো ওয়াল’। কিন্তু শনিবারই ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখবেন বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা। এই কারণেই জার্মান সংবাদমাধ্যম শনিবারের দ্বৈরথকে ‘ঘোস্ট ডার্বি’ বলে চিহ্নিত করছে।