বাংলায় করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে ভাল কাজ করছে, এবার সে কথা জানালেন খোদ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তিনি বলেন, ‘রাজ্যে করোনা পরীক্ষা অনেক বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর অনেক কাজ করছে। অনেক বেশি কাজ হচ্ছে। টেস্টিং যত বাড়বে, মৃত্যুর সংখ্যা কমবে। গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড নিয়মিত বৈঠক করছে। আমরা যেটা বলার চেষ্টা করছি তা কার্যকর হচ্ছে। আমরা বার বার কথা বলছি, এক সঙ্গেই বলছি। আমাদের ভিডিও কনফারেন্সও হয়েছে।’
একটি টিভি চ্যানেলে করোনার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, দেশের অর্থনৈতিক অভিমুখ কী হওয়া উচিত, তা নিয়েও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন নোবেলজয়ী। পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘যাঁরা হেঁটে যাচ্ছেন, তাঁদের দেখার দায়িত্ব সরকারের। রাজ্যগুলিকে টাকা দেওয়া দরকার। রাজ্যগুলো ভাবছে আমার একার দায়িত্ব। কেন? হোম কোয়ারেন্টিন বলা খুব সোজা, করা কঠিন। আমাদের দেশে যেখানে অল্প জায়গায় বহু মানুষ থাকে, সেখানে উচিত টেস্টিং এবং কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা।’
করোনা-উত্তর দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কী হতে পারে, সে ব্যাপারে নোবেলজয়ী বলেছেন, ‘পরিস্থিতির বদল হবেই। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এখন ভারতের আর্থিক প্যাকেজ বাড়ানো সম্ভব। না হলে ব্যবসার ক্ষেত্র খুলে লাভ নেই। এই মুহূর্তে মুদ্রাস্ফীতি, ফিসক্যাল ডেফিসিট— এসব দেখলে চলবে না। দেশের অর্থনীতি চলে মধ্যবিত্তের কেনাকাটার ওপর। মানুষ যাতে আশ্বস্ত হয়, যাতে টাকা আসে, সেদিকটাই দেখতে হবে সরকারকে। লোকের হাতে যেন ক্রয়ক্ষমতা থাকে, তা দেখতে হবে।’
কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎই দেশে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে বলেছে, এ প্রসঙ্গে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘সংখ্যা লুকোনো ঠিক নয়। স্বচ্ছতা দরকার লোককে আশ্বস্ত করার জন্য। যেখানে যেখানে টেস্টিং হচ্ছে, সেখানে যেন তার ফল স্থানীয় ভাবে জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিওর মানা দরকার। তথ্য নিয়ে সরাসরি সাধারণ মানুষকে জানানো দরকার।’ পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই এঁদের কথা না ভেবে এগোনো হয়েছে। এঁদের ঠিকানা নেই। মালিক খাওয়াবে না বা থাকার জায়গা দেবে না। তার ওপর মাইনে বন্ধ হলে যে অন্য কোনও উপায় নেই! এটা নিয়ে ভাবা হয়নি।’