বিশ্বজুড়ে বিগত ৩-৪ মাস ধরে করোনা ভাইরাস রীতিমত তাণ্ডব চালালেও, এখনও অবধি এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার করা যায়নি। তবে শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দিতে পারে ভাইরাসজনিত রোগের ওষুধ রেমডেসিভির। এদিন এমনটাই দাবি করলেন আমেরিকার শীর্ষ স্তরের বিজ্ঞানী এপিডেমিওলজিস্ট অ্যান্টনি ফাওসি।
হোয়াইট হাউসে ফাওসি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বহু পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, করোনা রোগীদের সারিয়ে তুলতে এখন যে সব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তাদের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি দ্রুত গতিতে কাজ করে রেমডেসিভির। ভাইরাসজনিত রোগের এই ওষুধ শরীরে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ রুখে দিতে পারে।’
ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ২৭ হাজার মানুষের। আমেরিকাতেও মৃতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। ফাওসির দাবি, করোনা রোগীদের আরও দ্রুত সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে রেমডেসিভির। আর ওই ওষুধ প্রয়োগে রোগীদের শরীরে কোনওরকম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
ফাওসি জানিয়েছেন, রেমডেসিভির কতটা কার্যকরী হচ্ছে, তা বোঝার জন্য আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার ৬৮টি জায়গায় ১ হাজার ৬৩ জন করোনা রোগীর উপর তা প্রয়োগ করে চালানো হয়েছিল ট্রায়াল। তাঁর মন্তব্য, ‘দেখা গিয়েছে, করোনা রোগীদের শরীরে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ রুখে দিতে পারে রেমডেসিভির।’
গত বছর চীনের ইউহান প্রদেশে প্রথম যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের উপর এই ওষুধই প্রয়োগ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’)। গত সপ্তাহে হু জানায়, সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল রেমডেসিভির। যদিও এ বারের মার্কিন পরীক্ষার মতো হু সেই ট্রায়াল খুব বেশি সংখ্যক করোনা রোগীর উপর চালায়নি। সেই ট্রায়াল শুধু একটি দেশের একটি প্রদেশের অল্পসংখ্যক করোনা রোগীর ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল।
কিন্তু ফাওসির দাবি, এ বার তাঁরা পরীক্ষা চালিয়েছেন আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়া, তিনটি মহাদেশে। ব্যাপক ভাবে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে এমন ৬৮টি জায়গায়। পরীক্ষা চালানো হয়েছে এক হাজারেরও বেশি করোনা রোগীর উপর। তবে হু-র এক পদস্থ কর্তা মিশেল রায়ান বুধবার ফাওসির এই দাবি নিয়ে কিছু বলতে চাননি।