কথায় আছে, একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। ঠিক একই হাল এখন বিশ্ব অর্থনীতির। একে তো মন্দার কোপে ভুগছিল বাজার, এবার গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। আর এই জোড়া ফলায় কার্যত বিপর্যস্ত গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করতে আলোচনায় বসলেন ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরও। করোনা মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় ও গভীর করতে সব সদস্য একমত পোষণ করেছে।
পাশাপাশি, সেখানে কোভিড-১৯-এ বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি বিশেষ ঋণ ভাণ্ডার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল বৈঠক শেষে এই কথা জানিয়েছেন রাশিয়া বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। উল্লেখ্য, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা, এই পাঁচটি দেশকে নিয়ে ব্রিকস গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ বছর আয়োজক দেশ রাশিয়া। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে বৈঠক হল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। অত্যন্ত প্রভাবশালী এই ব্লকভুক্ত দেশগুলিতে প্রায় ৩৬০ কোটি মানুষের বাস। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। এবং এই পাঁচটি দেশের সম্মিলিত জিডিপি প্রায় ১৬.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তবে ক্ষমতা ও প্রভাব থাকলেও ব্রিকস গোষ্ঠীর সমস্ত দেশই করোনার জেরে বিপর্যস্ত। তাই কীভাবে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই মহামারীর কবল থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, তারই উপায় নিয়ে আলোচনা করেন বিদেশমন্ত্রীরা। একই সঙ্গে ভেঙে পড়া অর্থনীতি চাঙ্গা করা-সহ অন্য বিষয়েও কথা হয়েছে। কারণ, করোনার জেরে বিভিন্ন দেশে লকডাউন চলছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বন্ধ। একইভাবে বন্ধ বৈদেশিক বাণিজ্য। মন্দার সামনে দাঁড়িয়ে বিশ্ব অর্থনীতি। এ বিষয়ে কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ব্রাজিলের আর্নেস্ত আরাউজোয়েরে প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।