চলছে লকডাউন। আর যার জেরে এখন কাজ নেই দিনমজুর স্বামীর। নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সংসারে কোনও আয় না থাকায় পাওয়া ঠিকঠাক চলছিল না সংসার। ফলে অভাবের তাড়নায় পাশের এক ব্যক্তির জমি থেকে চাষের সবজি চুরি করে আনতে গিয়েছিলেন। আর ওই জমিতে লাগানো ইলেকট্রিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল। মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের হানুভূঁইয়া গ্রামে। মৃত মহিলার নাম ঊষারানি ঘড়ুই (৪২)। অভাবের তাড়নায় তিনি সবজি চুরি করতে গিয়েছিলেন বলে মনে করছেন এলাকার লোকজন।
যার জমি তার নাম ররবীন্দ্রনাথ জানা। শনিবার সকালে রবীন্দ্রনাথ জানার চাষের জমিতে ঊষারানি ঘড়ুইয়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে খবর দেওয়া হয় নন্দীগ্রাম থানায়। পুলিশ এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় দেহ। পাঠানো হয় ময়না তদন্তের জন্য। এদিকে রবীন্দ্রনাথ জানা নামে ওই চাষির শাস্তি দাবি করেছেন এলাকার লোকজন। একইসঙ্গে কঠিন এই পরিস্থিতিতে সামান্য সবজি চুরি করতে গিয়ে যেভাবে মৃত্যু হল ওই মহিলার, তাতে শোকাচ্ছন্ন গোটা এলাকা।
স্বামী গণেশ ঘড়ুই দিনমজুরি করে সংসার চালান। লকডাউনের কারণে এখন বন্ধ কাজ। ফলে সংসার চলছিল না। এমনিতেই অভাবী সংসার। তার ওপর স্বামীর কাজ না থাকায় ঠিকঠাক খাওয়া জুটছিল না। অভাবের তাড়নায় গণেশ ঘড়ুইয়ের স্ত্রী ঊষারানি ঘড়ুই গিয়েছিলেন পাশের এক ব্যক্তির চাষের জমি থেকে কিছু সবজি আনতে। কিন্তু তিনি জানতেন না সেই জমিতে বিদ্যুতের তারের বেড়া দেওয়া আছে। জমিতে ঢুকতেই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। যার জমি তার ঘটনা ঘটেছে, সেই চাষির নাম রবীন্দ্রনাথ জানা। তিনি জানিয়েছেন, বহুদিন ধরে তার জমি থেকে চুরি যাচ্ছিল চাষের সবজি। তাই তিনি চুরি আটকাতে জমিতে বিদ্যুতের তার দিয়ে বেড়া দিয়ে রাখেন। তিনি কেন বিদ্যুতের তার দিয়ে জমি ঘিরে রেখেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকার লোকজন। রাতের অন্ধকারে যে কেউই বিদ্যুৎ তাদের সংস্পর্শে এলে মারা যেতে পারেন। তাই তার এই ভূমিকার সমালোচনা করছেন এলাকার লোকজন। পাশাপাশি অনেকেই তার শাস্তি দাবি করেছেন।