লকডাউনের মধ্যে গরীবদের জন্য সরকার যথেষ্ট কাজ করছে না। এমনটাই মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাউথ পয়েন্টের প্রাক্তনীর মন্তব্য, আমরা এখনও পর্যন্ত এমন কিছুই করে উঠতে পারিনি যা যথেষ্ট কিংবা তার কাছাকাছি।
এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার যে ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার কল্যাণমূলক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা দেশের জিডিপির মাত্র ০.৮ শতাংশ। এই অর্থ থেকে গরিব ও প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষকে নগদ এবং রেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে খুশি নন নোবেলজয়ী। বিবিসিকে অভিজিৎ বলেন, ‘আমার মনে হয় সরকারি স্তরে একটা ভয়ের বাতাবরণ আছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে। কিন্তু ভারতে বিপুল অসাম্যের পরিস্থিতি সামলাতে এই মুহূর্তে ভারত সরকারকে কিছু করতে হবে।’ সরকারকে অর্থ খরচ করার ব্যাপারে আরও আগ্রাসী মনোভাব নিতে বলছেন এমআইটির প্রোফেসর।
সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ আরও বলেন যে এই মহামারীর কারণে কাজ হারানো মানুষ এমন একটা সময়ে জোড়া বিপদে পড়েছেন যখন চাহিদার অভাবে দেশের অর্থনীতি মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তিনি এও বলেন যে লকডাউন একদিকে যেমন জরুরি তেমনই দেশের অর্থনীতি নিয়ে দূরদর্শী পরিকল্পনাও খুবই জরুরি। কারণ তিনি মনে করেন, টিকা না আসা পর্যন্ত এই মহামারী রোখা হয়ত সম্ভব নয়।
অভিজিতের কথায়, ‘সরকারের স্বচ্ছ পরিকল্পনা করা উচিত আগামী দিনে তাঁরা দেশের অর্থনীতিকে কীভাবে ফের চাঙ্গা করবেন।’ লকডাউন উঠে যাওয়ার পর জিনিসের চাহিদা বজায় রাখতে সামজিক উন্নয়ন স্কিমের আওতায় আসা মানুষদের হাতে অতিরিক্ত নগদের যোগান দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া ইন্টারভিউতে সেই পথও বাতলে দিয়েছেন তিনি। ভারতের অর্থনীতি আগে থেকেই চাহিদার অভাবে ভুগছে। বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো তার উপর এসে পড়েছে এই বিশ্ব মহামারী। ফলে স্বভাবতই দেশের বাজারে চাহিদা আরও তলানিতে। এই সময় চালু ওয়েলফেয়ার স্কিমগুলোতে আরও বেশি নগদের যোগান দিয়ে চাহিদার ক্ষেত্রটা প্রস্তুত করে দিতে হবে সরকারকেই। যাতে লকডাউন পরবর্তী সময় বাজারে চাহিদা ক্রমবর্ধমান হয়।