রাজ্যে এ হেন করোনা পরিস্থিতিতেও নিয়মিত কাজে যোগ দেননি যাঁরা, এবার বরখাস্ত করা হবে তাঁদের। শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা পুরসভা। এ-গ্রেড তালিকাভুক্ত বেশ কিছু স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং চিকিৎসকরা রয়েছেন এই তালিকায়। তবে শুধু মেডিক্যাল অফিসার নয়, শাস্তি পেতে চলেছেন স্বাস্থ্য কর্মীরাও। এমনকী বেশকিছু মেডিকেল অফিসারদের ছাঁটাইয়েরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে।
শুক্রবার সকালেই এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পরে এই প্রস্তাব অনুমোদন করেন মেয়র। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর রয়েছে পুর কমিশনার খলিল আহমেদেরও। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একটা বড় অংশের মেডিক্যাল অফিসার, গ্রুপ-‘এ’ পদমর্যাদার এই সময়কালে নিয়মিত কাজে যোগ দেননি। তার জেরে স্বাস্থ্য বিভাগের কাজ, জরুরী পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিন স্বাস্থ্য বিভাগের আরও একটি চিঠিও প্রকাশ্যে আসে। সেটি মেয়র পরিষদ স্বাস্থ্য অতীন ঘোষের সই করা প্রস্তাব। এদিন এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রে, লকডাউন সময়কালে যারা অনুপস্থিত থেকেছেন তাদের বেতন কেটে নেওয়া হবে। এছাড়াও বর্ধিত বেতনের নির্দেশ স্থগিত করা হবে। এমনকি কাজ থেকে বহিষ্কারও করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বিরুদ্ধে এই চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম থেকে লকডাউন চলাকালীন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সুবিধার্থে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় উপরমহলের কর্তাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা এবং বাকিদের জন্য গাড়ির তেলের খরচা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়। যে সমস্ত চিকিৎসক দূরে থাকেন তাঁদের শহরের কোন হোটেলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকেই তাদের দিয়ে আসা নিয়ে আসা করার ব্যবস্থাও হয়েছিল। এমনকী চিকিৎসক নিজে যেতে চাইলেই তার বিল মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল।
কিন্তু এরপরেও একটা বড় অংশের মেডিক্যাল অফিসারা এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে পরিষেবা দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। একইভাবে কাজ থেকে বিরত থেকেছেন বেশকিছু স্বাস্থ্যকর্মীরাও। এর ফলে ব্যাহত হয়েছে শহরের স্বাস্থ্যপরিসেবা। বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষকে। তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে কলকাতা পুরসভা।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ কন্ট্রাকচুয়াল বা চুক্তিভিত্তিক। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লক ডাউন চলাকালীন যে সমস্ত স্থায়ী মেডিকেল অফিসাররা কাজে যোগ দেননি তাদের বরখাস্ত করা হবে। অন্যদিকে, ছাঁটাই করা হবে চুক্তিভিত্তিক মেডিকেল অফিসারদের।