কলকাতা ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে কেন্দ্রীয় আমলাদের দল পা রাখার পনেরো মিনিট আগে তা নবান্নকে জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে যখন রাজ্য-কেন্দ্র সঙ্ঘাত চরমে, তখন এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ও বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র পরপর টুইট ঘিরে আরও উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যপালকে ‘বিজেপির মুখপাত্র’ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে পালটা তোপ দাগেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রাজ্যের হাসপাতালে যে ডাক্তার,নার্সরা লড়াই করছেন, তাঁদের পাশে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতো দাঁড়ানোর অনুরোধও করেছেন কলকাতার মেয়র। রাজ্যে রেশন বন্টনে সামঞ্জস্য রক্ষা হচ্ছে না, এই অভিযোগ করে রাজ্যপাল যে টুইট করেছেন, বিজেপি যে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে, তাকেও পালটা চ্যালেঞ্জ জানালেন ফিরহাদ হাকিম।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় টুইটারে অভিযোগ তোলেন, বাঙুর ও রামপুরহাট হাসপাতালে করোনা রোগীর মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ পড়ে আছে। রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় কতটা উদাসীন তা এই ঘটনা তুলে ধরেই প্রমাণ করতে চাইছিলেন তিনি। এ নিয়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ফিরহাদ। রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় ও তথ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানেন কি না, তা নিয়ে পালটা প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু একজন রোগী মারা গেলে হাসপাতালে চার ঘন্টা দেহ রাখতেই হয়। ডাক্তাররা চার ঘন্টা পরে সার্টিফিকেট দেন। এটা সবার জানা উচিত।’ এরপরই বাবুলকে তাঁর কটাক্ষ, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখের। মানুষের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা অত্যন্ত অমানবিক। যাঁরা ডাক্তারের সার্টিফিকেট দেওয়ার সময়টুকু নিয়ে রাজনীতি করছেন, তাঁরা মানুষের পক্ষে নয়, মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।’
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা করা উচিত থেকে শুরু করে রেশন বন্টন নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, সবাই খাবার পাচ্ছেন না বলে টুইট করেছিলেন ধনকর। এ নিয়ে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে ফিরহাদ বলেন, ‘বিজেপি মুখপাত্র হওয়াটা ঠিক নয়। ওনাকে বলব, রাজ্যের স্বার্থে কাজ করুন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে মানুষের পাশে যাচ্ছেন, কীভাবে মানুষকে বাঁচানো যায়, তা ভাবছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যপাল বাস্তবটা না জেনে রাজভবনে বসেই একটা প্রেস মিট করছেন। বিজেপি যা যা বলছে, তা নিয়েই টুইট করছেন।’ করোনা মোকাবিলা ও রাজ্যের আর্থিক ক্ষতি সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে যে ২৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছেন, তা পেতে রাজ্যপালের সাহায্য করা উচিত ছিল বলে জানান ফিরহাদ। তাঁর সাফ কথা, ‘রাজ্যপাল বা বিজেপি নেতারা রেশন নিয়ে যে অভিযোগ করছে তার একটা দুর্নীতির প্রমাণ নিয়ে আসুন। চ্যালেঞ্জ করছি, পারবেন না। শুধু রাজনীতি করার জন্যই বিজেপি এসব করছে।’