রাজ্যে লকডাউন ঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে আজ বাংলার সাত জেলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে দুটি আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাস্তবিক তথ্য নির্ভর নয় বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এটা স্রেফ কল্পনাপ্রসূত। রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করা হয়নি কেন্দ্রের তরফে।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্রের এই একতরফা পদক্ষেপ একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়। বিশেষ করে যখন কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ ভাবে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই চিঠি থেকেই জানা গিয়েছে যে, সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে ফোন করেছিলেন। আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পাঠানোর ব্যাপারে তখনই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে সেই কথোপকথনের অনেক আগে সকাল ১০ টা বেজে ১০ মিনিট নাগাদ এয়ার ইন্ডিয়ার একটি কার্গো বিমানে করে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল কলকাতায় পৌঁছে যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় ১৯ এপ্রিলের তারিখ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা তা হাতে পান সোমবার সকালে। কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল কলকাতা বিমানবন্দরে নামার ঠিক আধ ঘণ্টা আগে।
তাই মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেছেন যে, আন্তঃমন্ত্রক টিম পাঠানোর ব্যাপারে কেন্দ্রের এই অতি সক্রিয়তা ভাল, কিন্তু তা রাজ্যকে না জানিয়েই করা হয়েছে। এটা প্রচলিত প্রোটোকল তথা প্রথার পরিপন্থী। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী ওই দুই প্রতিনিধি দলের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রাজ্যের করার কথা। রাজ্য সরকারেরই গাড়ির বন্দোবস্ত করার কথা। কিন্তু তার আগেই বিএসএফ এবং এসএসবি-র গাড়ি নিয়ে তাঁরা মাঠে নেমে পড়েন। অথচ প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা অনুযায়ী তাঁদের উচিত ছিল আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা।
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে বলা হয়েছে সাতটি জেলায় লকডাউনের শর্ত ঠিকমতো মানা হয়নি। সেখানে পরিস্থিতি গুরুতর। কিন্তু বাস্তব ছবিটা তা নয়। কালিম্পংয়ে গত ২ এপ্রিলের পর কেউ আক্রান্ত হননি। জলপাইগুড়িতেও ৪ এপ্রিলের পর আক্রান্ত হননি কেউ। কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে সাতটি জেলা বেছে নিয়েছে তা একেবারেই নিজেদের কল্পনাপ্রসূত।