রাজনৈতিক এজেন্ডা নিয়ে রাজ্যে কাজ করতে এসে তিনি রাজভবনে বসেই পদে পদে শুরু করেছেন অন্ধ মমতা-বিরোধীতা। এমনই অভিযোগ ওঠে রাজ্যপালে রিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ যে কতটা সত্য এবার সেটাই প্রমাণ করলেন ধনকর। অন্ধ বিরোধীতা করতে গিয়েই এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করে বসলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করে ফের এই কুকীর্তিটি করেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেছেন, ‘আগে কাজ করুন, পরে প্রতিক্রিয়া দেবেন।’
রাজ্যপাল কথাটা এমন ভাবেই বলেছেন যে দেখে মনে হচ্ছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সাল থেকে রাজ্যে কোনও কাজই করেননি। এমনকি এই লকডাউনের মধ্যেও যেন তিনি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কার্যত রাজ্যপালের ট্যুইটে রাজ্যের অভিজ্ঞমহলের অনেকেই মনে করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করতেই এই টুইটকরেছেন ধনকর।
মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের তরফে কোনওদিনই রাজ্যপালকে হেয় করা হয়নি বা অপমান করা হয়নি। এমনকি ১লা বৈশাখের দিনও কলকাতার মেয়র ববি হাকিমের হাত ধরে রাজ্যপাল ভবনে মিষ্টি পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার ৩৬ ঘন্টার মধ্যেই এমন টুইট করে যে মনোভাবেই পরিচয় দিলেন রাজ্যপাল তা শুধু মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি অপমান নয়, কার্যত রাজ্যপাল পদটিকেও কলঙ্কিত করা বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে রাজ্যপাল ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে ১০০ শতাংশ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রশাসন। তাই রাজ্যে লকডাউন সফল করতে আধাসামরিক বাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে। সেই ট্যুইট বার্তার জেরে বুধবার বিকালেই মুখ্যমন্ত্রী সরব হন। জানিয়ে দেন, ‘কেউ কেউ প্যারা মিলিটারি ফোর্সের কথা বলছেন। আরে বলে দিলেই হল? প্যারা মিলিটারি ফোর্স কী করবে? আরে আর্মির ডাক্তারদেরও তো করোনা হচ্ছে। সিআইএসএফ-এর ডিজি কোয়ারেন্টিনে চলে গিয়েছেন। এই সময়ে ঘোলা জলে মাছ ধরাটা কি খুবই প্রয়োজন? এটা একটা কঠিন সময়। এটা যেন সমষ্টিগতভাবে না বাড়ে, সেটা যেন সবাই একটু খেয়াল রাখি।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়ার জেরেই বৃহস্পতিবার সকালে ট্যুইট করেন ধনকর। সেখানেই তিনি বলেন, ‘আগে কাজ করুন, পরে প্রতিক্রিয়া দেবেন। এটা একটা কঠিন সময়।’ এটা যে কঠিন সময় সেটা সবাই জানে। কিন্তু এর আগে কোনওদিন কোনও বাম বা ডান নেতা বা মন্ত্রীকে এই অপমানজনক ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রকাশ্যে পরামর্শ দিতে দেখা যায়নি। তার জেরে এখন রাজ্য জুড়ে কার্যত ক্ষোভ ছড়াচ্ছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। অনেকেই মনে করছেন ধনকর নিজে এটা প্রতি পদে পদে দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি সাংবিধানিক কোনও দায়দায়িত্ব পালন করতে আসেননি। এসেছেন বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করতে।