লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েও স্বস্তি নেই। তাই বুধবার দেশের ১৭০টি জেলাকে সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। যার মধ্যে রয়েছে বাংলার ৪টি জেলাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য আগেই রাজ্যের বেশ কিছু এলাকাকে চিহ্নিত করে ফেলেছিলেন। সরাসরি ‘হটস্পট’ বলা না-হলেও সেগুলিকে বলা হচ্ছিল ‘স্পর্শকাতর’ এবং ‘হাই-রিস্ক এলাকা’।
এরই মধ্যে গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রুটিন সাংবাদিক বৈঠকে যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানান, এই মুহূর্তে দেশের ১৭০টি জেলায় সংক্রমণের হার খুব বেশি বলে সেগুলিকে ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংক্রমণের খবর এসেছে কিন্তু ‘হটস্পট’ নয়, এমন জেলার সংখ্যা ২০৭টি। বাংলার ৮টি জেলা এই তালিকায় পড়ছে। হোয়াইট জোন হিসেবে চিহ্নিত এই ২০৭টি জেলাগুলিতে সংক্রমণ রুখতে বাড়তি নজরদারি করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। বাকি জেলাগুলিকে ‘গ্রিন জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন দাবি করেছেন, গোটা বিশ্বে সম্ভবত ভারতই করোনা-মোকাবিলায় সব চেয়ে ভাল কাজ করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন দাবি করলেও করোনা-সংক্রমণ মোকাবিলার প্রশ্নে এই মুহূর্তে দেশের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ, ওই ১৭০টি ‘হটস্পট’ জেলা। এ নিয়ে সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই বৈঠকে ‘হটস্পট’-গুলিতে কী ভাবে সংক্রমণ রোখা সম্ভব, হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। যুগ্মসচিব জানান, ‘হটস্পট’-এ বিশেষ দল নামানো হয়েছে। যারা এলাকার প্রতিটি বাড়ি ঘুরে কারও করোনার উপসর্গ রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখছে। ‘ক্লাস্টার’ বা সংক্রমণের ভরকেন্দ্রগুলিকে গণ্ডিতে বাঁধায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ‘ক্লাস্টার’-এ ঢোকার ও বেরোনোর আলাদা পথ তৈরি করতে বলা হয়েছে।
‘হটস্পট’ এলাকায় যাঁরা সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের পরীক্ষার পাশাপাশি সংক্রমিত এলাকাগুলির বাইরে যে ৫-৭ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের ‘বাফার জ়োন’ নির্দিষ্ট করা হয়েছে, সেখানেও কারও এই ধরনের উপসর্গ থাকলে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও হটস্পট এলাকা থেকে যদি টানা ২৮ দিন নতুন কোনও সংক্রমণের খবর না-আসে, তা হলেই সেটিকে ‘গ্রিন জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা যাবে।