করোনা সংক্রমণ রুখতে আজ সকালেই লকডাউনের মেয়াদ আগামী মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এদিনই ‘সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং’কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে মুম্বইয়ের বান্দ্রা স্টেশনে হাজির হলেন হাজার-হাজার মানুষ। যাঁরা মূলত পরিযায়ী শ্রমিক। সকলেরই বক্তব্য, দিনের পর দিন সামান্য খাবারটুকুও জুটছে না তাঁদের। এমনকি মিলছে না পানীয় জলও। তাই বাড়ি ফিরতে চান তাঁরা। সেই উদ্দেশেই এদিন স্টেশনে জমায়েত হয় তাঁদের। যদিও পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। যার ফলে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ভিড়।
যদিও লকডাউনের কারণে চলছে না যাত্রীবাহী ট্রেনও। কিন্তু অভাবে, খিদের তাড়নায় ফের যেভাবে একজোট হয়ে বাড়ি ফিরতে চাইলেন হাজার-হাজার শ্রমিক, তাতে বড়সড় অশনিসংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কাও। করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত এই মহারাষ্ট্রই। আর সেখানেই কিনা এই ভিড় হল, যা করোনার সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে কয়েকগুণ।
যদিও গত ২৮ মার্চও রাজধানীর আনন্দবিহার বাসস্ট্যান্ডে থিকথিক করছিল ভিড়। উদ্বিগ্ন মুখগুলোয় ছিল বাড়ি ফেরার আর্তি। সে ছবি দেখলে, কে বলবে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে! সামাজিক দূরত্বকে (সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাঁরা দিল্লির বাসস্ট্যান্ডে ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ভিনরাজ্য থেকে কাজ করতে আসা পরিযায়ী শ্রমিক।
সেই চিত্র স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল, পরিযায়ী শ্রমিকরা যদি এ ভাবে নিজের রাজ্যে ফেরার জন্য হুড়োহুড়ি করতে থাকেন, তা হলে লকডাউনের অর্থ কী? এরপরই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতি কেন্দ্রের কড়া বার্তা, পরিযায়ী শ্রমিকদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া আটকাতে রাজ্যগুলির সীমানা সিল করে দিতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিকরা যে রাজ্যে রয়েছেন, সেই রাজ্যকেই তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তার পরেও যদি পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্য ছাড়ার এই চিত্র না বদলায় তবে সারা দেশে ১৪৪ ধারা জারির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে পারে কেন্দ্র।