কথায় আছে, একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। ঠিক একই হাল এখন ভারতীয় অর্থনীতির। একে তো মন্দার কোপে ভুগছিল বাজার, এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনার ছোবল। করোনা ভাইরাসের জেরে যে অর্থনীতির বিপদ আরও বড় আকার ধারণ করতে চলেছে সেই সতর্কবার্তা আগেই শুনিয়ে দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন জানিয়েছেন, এই সময়ে প্রয়োজনে দেশের পাশেই থাকতে চান তিনি। এই মহামারীর ফলে ভারতের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতেই হবে দেশকে। এই বিশাল অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলার জন্যে যদি সরকারের তরফ থেকে তাঁর কাছে সহায়তা চাওয়া হয় তবে তিনি সহায়তা করতে এককথায় রাজি আছেন, সংবাদমাধ্যমকে স্পষ্ট জানান রাজন।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রুখতে দেশে টানা ২১ দিনের লকডাউন চলছে। এই লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতদিন ধরে দেশের সমস্ত কলকারখানা-অফিস আদালত বন্ধ থাকায় দেশের অর্থনৈতিক গ্রাফ একেবারে নিম্নমুখী। বিরাট ক্ষতির মুখে দেশের ব্যাঙ্কিং ও বিমান পরিষেবা। আবার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিষেবা ছাড়া সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ রয়েছে লকডাউনের জেরে। যার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা এখন তলানিতে। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে নির্দিষ্ট নীতি নিয়ে চলা এখন খুবই প্রয়োজন। দেশের এই দুর্দিনে যদি তাঁর কাছে অর্থনীতি বিষয়ক পরামর্শ চায় কেন্দ্রীয় সরকার তবে কি তা দেবেন তিনি?
সংবাদমাধ্যমের এই প্রশ্নের উত্তরে রাজন বলেন, ‘একটাই জবাব, সোজাসুজি হ্যাঁ বলবো।’ বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এই সময় পরামর্শ দানে প্রয়োজনে দেশে ফিরতেও রাজি আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর। ‘যদি ভারতে এই ভাইরাসটি খুব বেশিরকম ভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন ইতালি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ঘটেছে তবে তা মারাত্মক হবে, তাই আমাদের এই সংক্রমণকে ঠেকাতে খুব গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। আপনারা দেখেছেন কীভাবে এই দেশগুলোতে করোনা ভাইরাস জনস্বাস্থ্যের ওপর এক বিরাট প্রভাব বিস্তার করেছে, যথেষ্ট হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও রোগী চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। একের পর এক মৃত্যুও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিে অর্থনৈতিক তৎপরতায় কোনও পদক্ষেপ করা কঠিন’, বলেন রাজন।