কথায় আছে, একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। ঠিক একই হাল এখন ভারতীয় অর্থনীতির। একে তো মন্দার কোপে ভুগছিল বাজার, এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনার ছোবল। করোনা ভাইরাসের জেরে যে অর্থনীতির বিপদ আরও বড় আকার ধারণ করতে চলেছে সে কথা আগেই জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আর এবার তাদের প্রকাশিত ঋণনীতি রিপোর্টে সতর্কবার্তা দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বলা হল, করোনার জেরে মন্দার খাদের মুখে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা বিশ্ব অর্থনীতি ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিকেও ধাক্কা দেবে। লকডাউনের জেরে গভীর হবে অর্থনীতির ক্ষত। কতটা, তা বলা কঠিন এখনই।
সেই রিপোর্টেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের আক্ষেপ— ঠিক যখন ২০২০-২১ সালের বৃদ্ধি মাথা তুলবে বলে ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছিল, তখনই সব ওলটপালট করে দিল কোভিড। জল ঢেলে দিল অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে কেন্দ্র ও তাদের একের পর এক পদক্ষেপে। অর্থাৎ, ভারতের অর্থনীতি নিয়ে একের পর এক পূর্বাভাস আর পরিসংখ্যানে যে আশঙ্কার বন্যা বয়ে যাচ্ছে প্রতি দিন, বস্তুত বৃহস্পতিবার তা-ই আরও স্পষ্ট রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, করোনা, তাকে আটকাতে লকডাউন ও তাতে আর্থিক কর্মকাণ্ড থমকে যাওয়ায় বিশ্ব জুড়ে চোট খাওয়া উৎপাদন— এতেই খাঁড়া নামবে ভারতে। ধাক্কা খাবে বৃদ্ধি।
তবে সেই ধাক্কা কতখানি, তা বলেনি আরবিআই। বরং দাবি করেছে, এই মুহূর্তে যা অবস্থা তাতে বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন। কারণ, মনে করা হচ্ছে জন-জীবন, ব্যবসা-বাণিজ্য, উৎপাদন স্তব্ধ হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতিতে উৎপাদন সঙ্কুচিত হবে। তা মন্দাতেও ডুবতে পারে। যার প্রভাব থেকে নিস্তার নেই ভারতের। ফলে পরিস্থিতি চূড়ান্ত অনিশ্চিত। যে কারণে যা তথ্য আসছে, তা প্রতি দিন বৃদ্ধির ইঙ্গিতকে বদলে দিচ্ছে। আশঙ্কা যে বাড়ছে, এ দিনই তা বলেছেন আইএমএফের কর্ণধার ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তাঁর দাবি, ‘কোভিড যে বিদ্যুতের গতিতে বিশ্বের সামাজিক ও অর্থনৈতিক চেহারাকে চুরমার করেছে, তা স্মরণকালে হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না।’