করোনার থাবায় এই মুহূর্তে থরহরিকম্প গোটা দেশ। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে যখন ঢাল-তরোয়াল অর্থাৎ পর্যাপ্ত মাস্ক, প্রোটেক্টিভ অ্যাপ্রন, গ্লাভস ছাড়াই করোনার বিরুদ্ধে সর্বস্ব দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের ডাক্তার, নার্স বা অনান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেই সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। এবার তা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছে দিল্লীর অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এর রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আরডিএ)।
তাদের অভিযোগ, ব্যক্তিগত সুরক্ষার সরঞ্জাম (পিপিই), করোনাভাইরাস টেস্টিং কিট, এবং কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র সম্পর্কিত প্রশ্ন তুললে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীদের এই ধরনের সমালোচনার নিন্দা করে এইমস-আরডিএ বলেছে, এই ধরনের প্রশ্নগুলিকে ইতিবাচক ভাবে দেখা উচিত, এবং সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছে যেন স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্যার্থে বিতর্ক এবং আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত পরিসরের সৃষ্টি হয়।
এইমস-আরডিএ’র সভাপতি আদর্শ প্রতাপ সিং এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রীনিবাস রাজকুমার টি চিঠিতে বলেন, ‘গত ক’দিন ধরে কিছু ঘটনা ঘটেছে, যার প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আমাদের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য সহযোগী স্টাফরা পিপিই, করোনা টেস্টিং কিট এবং কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রের অভাব সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু রোগী এবং সহকর্মীদের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে তাঁদের এই প্রয়াসের ফলে প্রশংসার বদলে জুটেছে কড়া সমালোচনা। আধিকারিকদের উচিত, এই ধরনের প্রয়াসকে গ াবে দেখা।’
চিঠিতে মোদীর উদ্দেশ্যে এ-ও বলা হয়েছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়াকে আপনি নিজে যেহেতু এত ধরনের গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করেন, আপনি বুঝবেন এই পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের মানসিক অবস্থা কী হতে পারে। আমরা এইসব ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি এবং সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব যদি স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্যের জন্য বিতর্ক এবং আলোচনার একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, তাঁদেরকে ছোট না করে। তাঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত শাস্তি তুলে নিয়ে সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক।’ তাদের বক্তব্য, এই অতিমারীর সময়ে সরকারের দায়িত্ব এটা নিশ্চিত করা যে, এইসব ‘সৈনিকদের’ বক্তব্য শোনা হবে এবং তাঁদের মতামতকে সম্মান করা হবে, অপমান নয়।