করোনার জেরে দেশ জুড়ে লকডাউন। নাগপুরে কাজ করতেন তামিলনাড়ু নামাক্কালের বছর ২৩ এর লোগেশ বালাসুব্রমনিয়াম। লকডাউনের পরে আচমকা কাজ হারায়, বন্ধ হয়ে যায় রোজগার। তার পরেই আতঙ্কে ও অসহায়তায় বাড়ির পথ ধরেছিলেন এই শ্রমিক। ৫০০ কিলোমিটার দূরত্ব পেরোতে গিয়ে পথেই প্রাণ হারালেন তরুণ লোগেশ।
জানা গেছে, নাগপুর থেকে বেরিয়ে অনেকক্ষণ হেঁটে কোনও রকমে সেকেন্দ্রাবাদে পৌঁছে, সেখানকারই একটি আশ্রয় শিবিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যান এই শ্রমিক।
কিন্তু আদতে যে পরিস্থিতি একেবারই অনুকূল নয়, তারই প্রমাণ যেন লোগেশের এই মৃত্যু। লোগেশের সঙ্গেই হাঁটছিলেন সত্যা নামের এক শ্রমিক। তিনি বলেন, “তিন দিন ধরে হেঁটেছি আমরা। কিছুই চলছিল না। কয়েকটা ট্রাক অল্প করে পথ এগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ খুব হেনস্থা করেছে। কেউ কেউ খেতে দিলে খেতে পেয়েছি।”
চোখেমুখে অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক আর পেটে খিদে নিয়েই হেঁটে নিজেদের গন্তব্যে ফিরছেন কাতারে কাতারে মানুষ। আচমকা লকডাউনে তাঁদের রোজগার বন্ধ, থাকার জায়গা নেই। দু’মুঠো খাবার দেওয়ার কেউ নেই।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন সংক্রামক করোনা ভাইরাসতে স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছনো থেকে রুখতে পারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সেই কারণেই এই আপৎকালীন লকডাউন। সমস্ত অফিস, কলকারখানা, দোকানপাট, নির্মাণকাজ বন্ধ হয়েছে রাতারাতি। তবে এই অবস্থায় ভিন রাজ্যে থাকা শ্রমিকরা কী করবেন, কোথায় যাবেন, কেউ বলে দেয়নি। ফলে অভাবে হোক বা আতঙ্কেই হোক, বাড়ি ফেরার কথাই ভেবেছেন সকলে। কাজ না থাকলে অচেনা রাজ্যে জীবনধারণ করাই কঠিন। আবার ফেরার পথও কার্যত বন্ধ।