রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর বাংলার কো-অর্ডিনেটর ডাঃ প্রীতম রায় বা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদানের প্রশংসা পেয়েই থেমে থাকেননি তিনি। করোনা মোকাবিলায় ২০০ কোটির ফান্ড থেকে সরকারি হাসপাতালে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ সবটাই নিজের হাতে দায়িত্বে নিয়ে করেছেন মমতা। এবার তাঁর উদ্যোগেই আরও একটি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র পেল রাজ্য। এবার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও হবে করোনা নির্ণায়ক সোয়াব টেস্ট। সোমবার থেকেই এই পরীক্ষা শুরু হবে। জানা গিয়েছে, কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার জন্য যে বায়ো সেফটি ল্যাব দরকার তা রয়েছে ট্রপিক্যালের। তাই এই সিদ্ধান্ত। ইতিমধ্যে এক হাজার টেস্ট-কিট পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে সেখানে।
প্রসঙ্গত, এখন রাজ্যের দু’ জায়গায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়। একটি বেলেঘাটা নাইসেড। অন্যটি এসএসকেএম (পিজি) হাসপাতাল। নাইসেডে এ পরীক্ষা করার সাতটি মেশিন রয়েছে। এখন দু’টি মেশিন কাজ করছে। প্রয়োজনে বাকিগুলিও কাজে লাগানো হবে। সব মেশিন কাজ করলে রোজ সাড়ে পাঁচশো সোয়াব টেস্ট করতে পারবে নাইসেড। কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে সোয়াব পরীক্ষার সংখ্যা উত্তোরত্তর বাড়বে। তাই নতুন করে পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলিকেও এ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, মানুষকে স্বাচ্ছন্দ্য দিতে আরও একটি নয়া উদ্যোগও নিয়েছে মমতা সরকার। রাজ্যে ৩১টি সুলভ কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খুলেছে তারা। কলকাতা, রাজারহাট ও নিউটাউন এলাকায় থাকা মোট ৩১টি হোটেলে সুলভ কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্ট্রান ইন্ডিয়া-র কাছে অর্থের বিনিময়ে তাদের কিছু ঘর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের জন্য দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। যাঁদের ১৪ দিনের জন্য আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁরা ইচ্ছা করলে যাতে নিজেদের খরচে স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে দিয়ে দিনগুলি কাটাতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল।
প্রাথমিকভাবে ৩১টি হোটেল স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনে এই ধরনের ব্যবস্থা করতে রাজি হয়েছে। এর ফলে যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে তাঁরা ওই সুবিধা নিয়ে পারবেন। সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য ওই হোটেলগুলির নাম ও খরচের তালিকাও প্রকাশ করেছে সরকার। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন দেড় হাজার টাকা থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করে ওই হোটেলগুলিতে থাকা যাবে। আরও জানানো হয়েছে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরেও কোনও ব্যক্তি নিজের ইচ্ছানুযায়ী বাড়ি ফিরতে পারবেন না। স্বাস্থ্য দফতর থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই তা সম্ভব হবে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে ৩১টি হোটেলে ওই ব্যবস্থা চালু হলেও পরে অন্যান্য হোটেল কর্তৃপক্ষ যদি নিয়ম মেনে এই সুবিধা দিতে রাজি থাকে তাহলে সেখানেও এই ধরনের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হবে।