বাসের আসনে বসে সমানে এক মহিলা যাত্রী কাশছিলেন। যেভাবে দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে, তাই আর এই বিষয়টি নিয়ে কোনও রকমের ঝুঁকি নেননি সেই বাসের চালক। পুলিশের পরামর্শে বাস নিয়ে সোজা চলে যান বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে আরেক বিপদ!
বাস নিয়ে গেলেও, ওই যাত্রী হাসপাতালে ঢুকতে রাজি হননি। প্রথমে তিনি বাস থেকে নামতেও চাননি। বসেছিলেন বাসের ভিতরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই যাত্রীকে নিয়ে বেলেঘাটা আইডি চত্বরে হুলস্থুল পড়ে যায়। এর পর বেলেঘাটা থানার পুলিশ এসে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরে ওই বাসচালক জানিয়েছেন, বুধবার তিনি একটি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি) বিশেষে বাসে করে ভিনরাজ্যের কিছু শ্রমিক এবং আসানসোলের কয়েকজন বাসিন্দাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। বেলঘরিয়া ডিপোর দুটো বাস আসানসোলে ওই যাত্রীদের নামানোর পর এ দিন সকালে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। সেই মতো এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ চালকেরা বাস নিয়ে রওনা হন আসানসোল থেকে।
তার আগে বরাকর থানার পুলিশ এসে এক মহিলাকে সেই বাসগুলির মধ্যেই একটিতে তুলে দেয়। ওই থানার পুলিশকর্মীরা বাসচালককে অনুরোধ করেন, ওই মহিলার বাড়ি কলকাতার বেহালায়। তাঁকে যেন ধর্মতলায় তিনি নামিয়ে দেন। বাসচালক ওই যাত্রীকে তুলে নিয়ে বিষয়টি এসবিএসটিসি-র এক কর্তাকে জানিয়েও রাখেন।
কিন্তু এ দিন দুপুরে ধর্মতলায় ওই বাস পৌঁছনোর পর বিপত্তি বাধে। ওই মহিলা যাত্রী কিছুতেই নামতে চান না। বাসচালক জানিয়েছেন, আসানসোল থেকে ধর্মতলা আসার সময় ওই মহিলা যাত্রী গোটা পথটা কাশতে কাশতে এসেছেন। ধর্মতলায় নামতে না চাওয়ায় বাসচালক আবার সেই এসবিএসটিসি-র কর্তাকে জানান। খবর দেওয়া হয় ময়দান থানায়। মহিলা যাত্রী যে হেতু কাশছিলেন, তাই ময়দান থানা তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
এর পর বাসচালক বাস নিয়ে পৌঁছন বেলেঘাটায়। কিন্তু, সেখানে গিয়েও তাঁকে বাস থেকে নামানো যায়নি। বলে-কয়ে, বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাঁকে না নামাতে পেরে পরিবহণ দফতরের তরফে এর পর খবর দেওয়া হয় বেলেঘাটা থানায়। বেলেঘাটা থানার পুলিশ কিছু ক্ষণ পর এসে ওই মহিলাকে বাস থেকে নামিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই মহিলা যাত্রীকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়।এর পর বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে যাওয়া ওই বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়।