করোনা আতঙ্কের আবহের মধ্যেও ফের দৃষ্টান্ত গড়ল কলকাতা পুলিশ। সঠিক সময়ে পুলিশের তৎপরতায় বাঁচল দুটি প্রাণ। বুধবার মধ্যরাতে লকডাউন-এর কারণে গাড়ি না পেয়ে মাঝরাস্তায় প্রসব যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছিলেন এক প্রসূতি। ঠিক সেসময় ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় কলকাতা পুলিশ। নিজেদের গাড়ি করে সেই প্রসূতিকে আরজিকর হাসপাতালে পৌঁছে দেন ট্যাংরা থানার আধিকারিকরা।
ক্যানেল সার্কুলার রোডের বাসিন্দা সুভাষ দাসের স্ত্রী ঈশিতা দাস সন্তানসম্ভবা ছিলেন। বুধবার রাতে হঠাৎ করে প্রসব যন্ত্রণা হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন বাপের বাড়ির লোকেরা। রাত বারোটা নাগাদ তাঁকে বাড়ির একটি গাড়ি করেই আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত জিকে রোড এবং ক্রিস্টোফার রোডের ক্রসিংয়ের কাছে এসে হঠাৎ করেই ব্রেক ডাউন হয়ে যায় ওই গাড়ির। মাথায় হাত পড়ে প্রসূতির পরিবারের।
চালক গাড়িটি সারানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হন। ততক্ষনে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে অন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে প্রসূতির বাড়ির সদস্যরা। কিন্তু রাজ্যজুড়ে তো লকডাউন। রাস্তায় কোনও গাড়ির দেখা নেই। এদিকে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ঈশিতা দেবী। অসহায় বাড়ির লোকের কোনও উপায় খুঁজে পায় না।
ঠিক সেই সময় এই ঘটনা নজরে আসে ওই এলাকায় ট্রাফিক কিয়স্কে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মীর। তৎক্ষণাৎ ফোন করে তিনি ঘটনাটি জানান ট্যাংরা থানার ওসিকে।
তারপর পুলিশের সহায়তায় পুলিশের গাড়িতে করেই ওই প্রসূতিকে কয়েক মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে দেওয়া হয় আরজিকর হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় প্রসূতি বিভাগে। প্রাণে বাঁচেন ঈশিতা দেবী। লকডাউনের সময় মধ্যরাতে দেবদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া পুলিশের ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ওই প্রসূতির পরিবার।