উত্তরপ্রদেশের লক্ষৌ থেকে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার দূরে পিলভিট জেলায় কয়েকজন প্রশাসনিক আধিকারিক যা কাণ্ড ঘটালেন তা দেখে এই প্রশ্ন উঠছে যে, সাধারণ মানুষ তো কোন ছাড়, আদৌ কতটা সতর্ক সরকারি আধিকারিকরা?
রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর আহ্বানে দেশ জুড়ে ‘জনতা কারফিউ’ চলাকালীন প্রশাসনিক আধিকারিকদের কীর্তির একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার হয় এবং ভিডিওটি নিয়ে তুমুল বিতর্কও তৈরি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে জেলা শাসকের নেতৃত্বে অনেক লোক ভিড় করে ঘণ্টা বাজিয়ে, স্টিলের প্লেট বাজাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই যে সমস্ত মানুষজন অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার সঙ্গে জড়িত তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতে রবিবার বিকেল ৫টায় হাততালি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বারেবারেই সকলকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যাতে কোনও জমায়েত না হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, হাততালির বদলে রাস্তায় দলবল নিয়ে বেরিয়ে মহানন্দে থালা, ঘণ্টা ইত্যাদি বাজাতে শুরু করেছেন খোদ সরকারি আধিকারিকরাই! এই ঘটনা ফের আঙুল তুললো প্রশাসনের বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোর দিকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি নিয়ে ব্যাপক শোরগোল শুরু হওয়ার বিপাকে পড়ে ঢোঁক গিলেছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রশাসন। পিলভিট পুলিশের তরফ থেকে বলা হয় ওই সরকারি আধিকারিকরা মোটেই ‘কারফিউ অস্বীকার করেননি।’ অথচ ওই ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ সুপার অভিষেক দীক্ষিত শঙ্খ বাজাতে বাজাতে রাস্তা দিয়ে চলেছেন, জেলা শাসক বৈভব শ্রীবাস্তব চারদিকে অসংখ্য লোক জড়ো করে হাততালি দিচ্ছেন, বাজানো হচ্ছে স্টিলের থালা বাসনও। এমনকী কিছু বাচ্চাকেও ওই ভিড়ের মধ্যে দেখা গেছে। গোটা ঘটনা নিয়ে উঠেছে বড়সড় প্রশ্ন।
পরে, একটি টুইট বার্তায় পিলিভট পুলিশ জানায়, যাতে স্থানীয়রা তাঁদের বাড়িঘর থেকে না বের হন তা খতিয়ে দেখতেই দলবল সমেত রাস্তায় পর্যবেক্ষণে নামেন ওই আধিকারিকরা। ‘জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপার কারফিউ ভাঙার কোনও চেষ্টা করেননি। কিছু মানুষ বাড়ি থেকে (রাস্তায়) বেরিয়ে আসছিলেল, তাই তাঁদের ফিরে যেতে বলা হচ্ছিল’, হিন্দীতে টুইট করে পুলিশ।