মঙ্গলবারই সন্ধান মিলেছিল রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্তের। আর শুক্রবার সকালে রাজ্যের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তের খবর মিলতেই আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে রাজ্যবাসীর। এ হেন করোনা আতঙ্কের পরিস্থিতিতে রাজ্যে রেশন সামগ্রীর বণ্টন স্বাভাবিক রাখতে শুক্রবার খাদ্যভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে খাদ্য দফতর। কোন জেলায় কত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী মজুত রয়েছে তার তালিকা অফিসারদের থেকে নেওয়া হবে বলে খবর।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ৯ কোটি ১৫ লক্ষ মানুষকে ভর্তুকিতে চাল ও গম দেয় রাজ্য সরকার। করোনা বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন জেলার রেশন দোকানে খাদ্য সামগ্রী বিলি যাতে ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে খাদ্য দফতর। সে কারণে দফতরের আধিকারিকদের পাশাপাশি এসেনসিয়াল কমোডিটি সাপ্লাই কর্পোরেশন ও স্টেট ওয়ার হাউসিং কর্পোরেশনের আধিকারিকদেরও বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এই দুই দফতরের আধিকারিকদের থেকে কোন জেলায় কত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী মজুত রয়েছে তার তালিকাও নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের সর্বত্র খাদ্যসামগ্রীর পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে বলে বৃহস্পতিবারই আশ্বস্ত করেছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ‘দিনভর বিভিন্ন বাজারে ফোন করে আমি নিজে খোঁজ নিয়েছি। সর্বত্র বিপুল পরিমাণে চাল ও গম মজুত রয়েছে। মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, করোনা ঠেকাতে অবশ্যই সতর্ক হোন, কিন্তু খাদ্যসামগ্রী জোগান নিয়ে অহেতুক ভয় পাবেন না। আমরা কোথাও কালোবাজারি করতে দেব না। কালোবাজারির চেষ্টা হচ্ছে, এমন খবর পেলেই আমাদের সরকার কড়া ব্যবস্থা নেবে।’
উল্লেখ্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্ধ আইসিডিএস কেন্দ্রের বাচ্চাদের বাড়িতে চাল ও আলু পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বহু আইসিডিএস সেন্টারে পর্যাপ্ত চাল নেই। আইসিডিএস সেন্টারে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া চাল দিলেও বহু সময় স্টক কম থাকার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের পরে তারা অনেক সময় চাল পাঠায়। এফসিআইয়ের চাল দিতে দেরি হলে জেলাশাসকের দাবি মতো খাদ্য দফতর চাল পাঠায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু জেলায় এফসিআইয়ের চাল পাঠাতে দেরি হচ্ছে। সে কারণে খাদ্য দফতর চাল দেবে বলে জানিয়েছে।
শুধু চাল বা গমের জোগান স্বাভাবিক রাখাই নয়, রেশন নেওয়ার লাইন থেকে করোনা ভাইরাস যাতে না ছড়ায় সেই বিষয়েও সতর্ক থাকতে চাইছে খাদ্য দফতর। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে স্বাস্থ্য দফতর ভিড় এড়ানোর পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি এক মিটার দূরত্ব রাখার কথা বলেছে। সেই কথা মাথায় রেখে রেশন লাইনে গ্রাহকদের এক মিটার ছাড়া ছাড়া দাঁড়ানোর নির্দেশিকা দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিলারদের দোকানে স্যানিটাইজার রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। লাইনে দাঁড়ানো রেশন গ্রাহকদের তা দিয়ে হাত পরিষ্কার করে রেশন নেওয়ার অনুরোধ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।