কেরালা থেকে ফিরেছেন। চোখমুখ ফোলা। দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, তিনি অসুস্থ। অথচ বহাল তবিয়তে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলাশাসক। দেশের মধ্য অন্যতম করোনা উপদ্রুত রাজ্য কেরালা। সেখান থেকে ফিরেও নিজেকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখেননি জেলাশাসক। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে। এখানেই শেষ নয়। আরও এক ধাপ এগিয়ে কোনওরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া রোগীর চোখ-মুখ দেখেই তাঁর শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে কি হয়নি, তা বলে দিচ্ছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। একদিকে, নবান্নের কর্মরত সরকারি আমলা মায়ের বিরুদ্ধে যখন ছেলের শরীরে সংক্রমণ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোয় দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ উঠেছে, তখন এই ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আতঙ্কে তটস্থ ঝাড়গ্রামবাসী।
আতঙ্কে জেলাশাসকের অফিসে লোধা-শবরদের উন্নয়নের মিটিংয়ে গরহাজির লোধা-শবররা। তাঁদের বক্তব্য, ‘কেরল থেকে ঝাড়গ্রামে করোনা ভাইরাস এনেছেন জেলাশাসক। কেরল থেকে অসুস্থ হয়ে এসে কোয়ারান্টাইনে না থেকে করোনা ছড়াচ্ছেন জেলাশাসক।’ যদিও এখনও ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা কোনও ব্যক্তির অসু্স্থ হওয়ার বা আইসোলেশনে ভর্তি হওয়ার কোনও রেকর্ড নেই।
রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে, বিদেশ অথবা উপদ্রুত রাজ্য থেকে কেউ এরাজ্যে এলে তাঁর ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ, জেলাশাসক নিজেই এই নিয়ম না মেনে কেরল থেকে ফিরেই অফিসে বসতে শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। এব্যাপারে জেলাশাসককে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। ‘নো কমেন্টস’ বলে জানান। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ-কে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি চোখে দেখেই বলে দিচ্ছেন করোনার সংক্রমণ আছে না নেই। তাঁর দাবি, ‘আমি খালি চোখে দেখেই বুঝতে পারি। আমি ওনাকে দেখেছি। ওনার কিছু নেই।’
সামগ্রিকভাবে এই ঘটনায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে জেলাশাসকের দফতরের কর্মী থেকে এলাকাবাসীর মনে। জেলাশাসক ও সিএমওএইচ-র গা-ছাড়া মনোভাবের জন্য বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন লোধা-শবর সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ থেকে স্থানীয়রা। প্রসঙ্গত, ভারতে করোনা এখন তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে সঠিক সাবধানতা অবলম্বন না করলে, কমিউনিটি সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়।