সোমবার কাশ্মীরে রুদ্ধশ্বাস জিতে ১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। তবে হারের ফলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যে ক্ষীণ সম্ভাবনা বেঁচে ছিল কাশ্মীরের, তা শেষ হয়ে গেল। তবে এদিন ম্যাচ শেষে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল স্টেডিয়াম।
সোমবার আই লিগে শেষ মুহূর্তের ভিক্তর পেরেস আলন্সোর পেনাল্টি থেকে করা গোলে নাটকীয় জয়ের পরে রিয়াল কাশ্মীরের কোচের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মারিয়ো রিভেরা। তিনি বলেছেন, ‘‘রিজার্ভ বেঞ্চে বসে কাশিম আইদারাকে বাঁদর বলেছেন কাশ্মীর কোচ ডেভিড রবার্টসন।’’
প্রশ্ন উঠছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন কি কাশ্মীর কোচের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে? আই লিগের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুনন্দ ধর দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘রেফারি ও ম্যাচ কমিশনার যদি এই ধরনের কোনও মন্তব্য শুনে থাকেন, তা হলে তদন্ত হবে।’’ ফেডারেশন সূত্রে খবর, অভিযোগ প্রমাণিত হলে শুধু রবার্টসন নন, কড়া শাস্তি হতে পারে রিয়াল কাশ্মীরেরও।
সোমবার শ্রীনগরের টিআরসি স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। প্রথমার্ধেই কাশ্মীরের রবিন সিংহের কনুইয়ের আঘাতে মাথা ফেটে যায় লাল-হলুদ রক্ষণের প্রধান ভরসা জনি আকোস্তার। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে কাশ্মীরের দানিশ ফারুখকে লাল কার্ড (দ্বিতীয় হলুদ) দেখান রেফারি। সংযুক্ত সময়ে লাল কার্ড দেখেন লাল-হলুদের এডমুন্ড লালরিনডিকা ও কাশ্মীরের কাল্যাম হিগেনবোথাম। পুরো ম্যাচে ছ’জনকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এর মধ্যে পাঁচ জনই কাশ্মীরের! ইস্টবেঙ্গলের এক জন। তিনি কাশিম আইদারা।
সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ কোচের অভিযোগ, ‘‘ম্যাচ চলাকালীন কাশ্মীর কোচ রিজার্ভ বেঞ্চে বসে কাশিমকে বাঁদর বলেছেন। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ফুটবলারদের সম্মান না করে যে ভাবে উনি বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না।’’ যোগ করেছেন, ‘‘এই ম্যাচটা জিততে ওরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, যা কাম্য নয়।’’ ম্যাচের মধ্যেই এক দর্শক ঢুকে পড়েন মাঠে। তাঁকে পুলিশ মাঠের বাইরে নিয়ে যায়। সহকারী কোচ বাস্তব রায় বললেন, ‘‘শুরু থেকেই ওদের দেখে মনে হচ্ছিল, রাগবি খেলতে নেমেছে। একা কাশিম নয়, সামাদ আলি মল্লিকও বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্যে শিকার হয়েছে।’’ কাশ্মীর কোচ রবার্টসন অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন, ‘‘এটা কী ভাবে সম্ভব? আমরা বিপক্ষকে সম্মান করি।’’