আগামী বছর রাজ্য বিধানসভার ভোট। ফলে আসন্ন পুরসভা নির্বাচনই সেমিফাইনাল। তাই পুরভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণায় এখনও ঢের দেরি থাকলেও মাসখানেক আগেই বেজে গিয়েছে পুরভোটের দামামা। আর এরই মধ্যে তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার হিড়িক লেগেছে। আগ্রহীদের তালিকাও বেশ আকর্ষণীয়। কেউ পেশায় চিকিৎসক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, স্কুলশিক্ষক, কেউ বা বেসরকারি আইটি কোম্পানিতে কর্মরত। এমনকী গৃহবধূ বা সমাজসেবীও রয়েছেন। অনেকেই দলের কর্মী, কেউ আবার রাজনীতির বৃত্তের বাইরে। সবার হাতেই ঘুরছে মুখবন্ধ খামে ওয়ার্ডের নাম, নিজের নাম, ঠিকানা সহ ‘রাজনৈতিক বায়োডেটা’।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কলকাতা পুরসভায় মেয়র কিংবা ডেপুটি মেয়রের ঘরের বাইরে এমনই আবেদনকারীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। হাতের চিরকুটে একটাই লেখা, ‘প্রার্থী হতে চাই। বায়োডেটা জমা করব।’ এমনিতেই নির্বাচনের আগে কর্মব্যস্ততা তুঙ্গে। তার মধ্যে এই নয়া ‘কাজ’ সামলাতে মেয়র বা ডেপুটি মেয়রের ব্যক্তিগত আপ্ত সহায়কদের কার্যত ব্যতিব্যস্ত অবস্থা। অবশ্য সেগুলি তাঁরা ফাইল করেছেন সযত্নেই। জমা পড়া জীবনপঞ্জি’র সংখ্যাটাও তাক লাগানোর মতোই। শুধু কলকাতা পুরসভায় জমা পড়েছে প্রায় পাঁচশো ‘রাজনৈতিক বায়োডেটা’। ওয়ার্ড পিছু জমা পড়েছে কম করে পাঁচ-ছ’টি বায়োডেটা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তা আট-দশটিও হয়েছে।
তবে আগ্রহীদের ‘ভিড়’ শুধুই কলকাতা পুরসভার অলিন্দে নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতেও জমা পড়ছে প্রতীক প্রত্যাশীদের আবেদন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। আবার তিনিই তৃণমূলের সাংগঠনিক পুরদলের চেয়ারম্যান। তাই তাঁর কাছে আবেদন পড়ছে প্রচুর। কালীঘাটে আবেদনের ভিড় সামলাতে তৃণমূল ভবনে বায়োডেটা জমার কাউন্টার হয়েছে। প্রার্থী হওয়ার আবেদনের এই হিড়িককে তৃণমূল অবশ্য ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই দেখছে। দলের বক্তব্য, কর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকতেই পারে। উল্টে দলের গণ্ডি পেরিয়ে জনমানসে প্রার্থী হতে চাওয়ার এই ‘আগ্রহ’ রীতিমতো উপভোগ করছে ঘাসফুল শিবির।