ভোটে জিতে তৃতীয়বার দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আর তারপরেই সিপিআই নেতা কানহাইয়া কুমার-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করার অনুমতি দিয়েছে তাঁদের সরকার। চার বছর আগে কানহাইয়ার বক্তৃতার প্রশংসা করে এই কেজরিই নরেন্দ্র মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তাঁর সেই অবস্থান বদল নিয়ে গত কাল রাত থেকেই সরব বিভিন্ন মহল। পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ এদিন এক ধাপ এগিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘মহাশয় অরবিন্দ কেজরীবাল, কত দামে নিজেকে বিক্রি করলেন?’
কানহাইয়া নিজে অবশ্য দিল্লী সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলাটির বিচার হওয়া উচিত, যাতে ‘দেশদ্রোহ আইনের অপব্যবহার সম্পর্কে লোকে জানতে পারেন।’ সেই টুইটকেই রিটুইট করেছেন অনুরাগ। কেজরির উদ্দেশে লিখেছেন, ‘আপনাকে আর কী বলব! মেরুদণ্ডহীন বলা মানেও প্রশংসা করা। আপনি তো নেই-ই। আপনার আম আদমিও এখন উধাও।’
দিল্লী হিংসার প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহেও আপ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনুরাগ। টুইটারে লিখেছিলেন, ‘এই আম আদমি পার্টিই কি দিল্লীর ভোটে জিতল? আপনি কোথায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল? আপনার দিল্লী তো জ্বলছে। অমিত শাহেরা কি আপনাকে কিনে নিয়েছেন? নাকি আপনি নিজেই বিবেক বিক্রি করে দিয়েছেন?’ সেইসময় কেজরিওয়ালকে নিশানা করেছিলেন পি চিদম্বরম, জেএনইউয়ের ছাত্র সংগঠনও।
২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র-মিছিলে দেশ-বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি এবং এবিভিপি। তাঁদের আঙুল ছিল বাম ছাত্র সংগঠনের দিকে। সেইসময় কানহাইয়া, উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য-সহ একাধিক ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়। কানহাইয়া তখনই জানিয়েছিলেন, তিনি ওই স্লোগান দেননি। তাঁর পাশে দাঁড়ায় দেশের সব ক’টি বিরোধী দল। পরে কানহাইয়া-রা জামিন পান।
দেশদ্রোহের মামলার খবর চাউর হওয়ার পর গতকাল কানহাইয়া বলেন, ‘পুলিশ প্রথম যখন চার্জশিট দিয়েছিল, তখন আমি বিহারে ভোটে লড়তে যাচ্ছি। এখন আবার বিহারে (বিধানসভা) ভোট আসছে।’ সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে গত এক মাস ধরে বিহারের বিভিন্ন জেলায় কানহাইয়ার সভায় ভিড় উপচে পড়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, ভয় পেয়েই তাঁকে আটকাতে মরিয়া বিজেপি। আর বিজেপিকে সাহায্য করতেই এই মামলায় সায় দিয়েছেন কেজরিওয়াল।