রাজ্যে এখন রেশন গ্রাহকদের আধার নম্বর সংযুক্তিকরণের কাজ জোরকদমে চলছে। সওয়া সাত কোটিরও কিছু বেশি রেশন গ্রাহকের আধার নম্বর সংযুক্তিকরণ হয়েছে। রামবিলাস পাসোয়ান তাঁর চিঠিতে বলেছেন, আধার সংযুক্তিকরণ ও ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেলস (ই-পস) যন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী বণ্টন করে রেশন ব্যবস্থার সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী। তবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আধার যাচাইয়ের মাধ্যমে যে এখনও রাজ্যে খাদ্যসামগ্রী রেশনে দেওয়া শুরু হয়নি, সেটাও ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
যদিও রাজ্যের খাদ্য কর্তাদের দাবি, ই-পস যন্ত্রে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে আধার নম্বর যাচাই করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এপ্রিল থেকে রাজ্যে তা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। খাদ্য দপ্তর সূত্রে বলা হচ্ছে, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সংযুক্তিকরণের কাজ রাজ্যে শেষ হয়ে যাবে। নতুন রেশন কার্ড গ্রাহকদের বাড়িতে ডাকযোগে পাঠানোর আগে আধার সংযুক্তিকরণ করে দেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রীর চিঠির বড় অংশ জুড়ে অবশ্য রয়েছে, এক দেশ এক রেশন কার্ড নীতির কথা। আগামী জুন থেকে গোটা দেশে এই ব্যবস্থা চালু করার ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও এতে রাজি নয়। এই ব্যবস্থা চালু হলে একজন রেশন গ্রাহক দেশের যে কোনও প্রান্তে গিয়ে তাঁর বরাদ্দ চাল-গম সংগ্রহ করতে পারবেন। খাদ্যদপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ চালু করার ক্ষেত্রে তাঁদের অসুবিধা আছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারও জানে। তবে এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নবান্ন নেবে।
এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও কারিগরি ব্যবস্থা ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার (এনআইসি) ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে। এর জন্য রাজ্য সরকারকে নতুন করে রেশন কার্ড ছাপা বা পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে না। রাজ্যের উপর কোনও অতিরিক্ত আর্থিক বোঝাও চাপবে না। এই ব্যবস্থা চালু হলে রাজ্যের বরাদ্দ খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দের পরিমাণও বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক করা হবে।
ইতিমধ্যে ১২টি রাজ্য যে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেটাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী। তবে রাজ্য খাদ্য দপ্তরের বক্তব্য, অন্যরা করলেও এখানে কিছু বাস্তব অসুবিধা আছে। রাজ্য সরকার নিজের তহবিল থেকে প্রায় তিন কোটি মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করে। কেন্দ্রের প্রকল্পের সুবিধা ওই রেশন গ্রাহকরা পাবেন না। রাজ্যে গণবন্টন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছে কেন্দ্র। রেশন ব্যবস্থার সংস্কারে রাজ্য সরকারের সক্রিয় ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ ব্যবস্থা এ রাজ্যেও দ্রুত চালু করতে মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী।