বাকি রয়েছে আর ৭২ ঘন্টা। ৩রা মার্চ সকাল ৬টায় তিহাড় জেলে ফাঁসি হবে নির্ভয়ার ৪ ধর্ষকের। জেলে এখন জীবনের শেষ ৭২ ঘন্টার প্রহর গুনছে অভিযুক্ত পবন গুপ্তা, অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা এবং মুকেশ সিং। এর আগে দু’বার নির্ভয়া গণধর্ষণের ঘটনায় চার দোষীর ফাঁসির সাজার দিন ঘোষণা হয়েছিল। তবে আইনি ব্যবস্থার নানা বেড়াজাল এবং টালবাহানায় পিছিয়ে গিয়েছিল ফাঁসির দিন।
এই ৪ ধর্ষকের ফাঁসি নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। কখনও আইনি জটিলতা, কখনও বারংবার রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি, কখনও পবনের মাথা ফাটিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এবং তার জেরে তাঁর মানসিক সুস্থতা নষ্ট হওয়ার দাবি ইত্যাদি নানা কারণে আটকে গেছে ফাঁসি। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে এসব কিছুই হয়নি তাঁর। প্রাণ বাঁচাতেই এই নাটক করছিল সে। তাই অবশেষে ফাঁসির চূড়ান্ত দিনস্থির হয়েছে ৩রা মার্চ। নির্ভয়ার মা-বাবা-সহ গোটা দেশ এখন সেই দিকেই তাকিয়ে।
প্রাথমিক ভাবে দিল্লীর বিশেষ আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে বলেছিল, ২২ জানুয়ারি ৪ দোষীর ফাঁসি দিতে হবে। এর পর সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি জানিয়েছিল দুই অভিযুক্ত। সেই আর্জি খারিজ হওয়ার পর দিল্লীর নিম্ন আদালতের ওই মৃত্যু পরোয়ানার রায় চ্যালেঞ্জ করে দিল্লী হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে মুকেশ সিং। এর পরেই নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি পিছিয়ে যায়। ২২ জানুয়ারি ফাঁসি দেওয়া যাবে না বলে রায় দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। পরবর্তী নির্দেশে বলা হয় ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ছ’টায় ফাঁসি হবে নির্ভয়া-কাণ্ডের অপরাধীদের। আগের ফাঁসির তারিখ পিছিয়ে যাওয়ার পরে ফের নতুন তারিখ ঘোষণা করে দিল্লি আদালত। কিন্তু দোষীরা নানা ভাবে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোয় ফের পিছিয়ে যায় এই তারিখও।
সাত বছর পর রায়দানের পরেও চলছিল টালবাহানা। বারবার ফাঁসির তারিখ পিছিয়ে যাওয়ায় এতদিনের কার্যকর হয়নি সাজা। এই ঘটনায় দেশবাসীর পাশাপাশি হতাশ এবং ক্ষুব্ধ নির্ভয়ার পরিবারও। নির্ভয়ার মা আশাদেবী কখনও প্রকাশ্যেই চোখের জল ফেলেছেন। কখনও বা মনকে শক্ত করে অপেক্ষা করেছেন ন্যায়বিচারের। ফাঁসি নিয়ে বারবার বিলম্ব হওয়ায় নির্ভয়ার মা আশাদেবীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “মনে হচ্ছে আমাদেরই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। সাতবছর ধরে তিলে তিলে মরছি আমরা। এতদিন পর রায় এল। তারপর এত টালবাহানার কি খুব দরকার ছিল।“ তবে এর পাশাপাশি রায়দানের পর খানিক স্বস্তিতেও ছিল নির্ভয়ার পরিবার। তাঁর মা বলেছিলেন, “বিচারব্যবস্থার উপর অন্তত সাধারণ মানুষের আস্থা থাকবে।