অশান্তি থামছেই না উত্তর-পূর্ব দিল্লীতে। চারদিন ধরে জ্বলছে রাজধানী শহরের বিভিন্ন এলাকা। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এখনও পর্যন্ত দিল্লী হিংসার বলি হয়েছেন ৩৪জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মী এবং এক গোয়েন্দা অফিসারও। এর মধ্যেই সামনে এসেছে ঝলসে যাওয়া এক স্কুলের ছবি। ক্লাসরুম, পড়ুয়াদের বসার বেঞ্চ থেকে শুরু করে পরীক্ষার খাতা-পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে সবকিছুই। উন্মত্ত জনতা আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল উত্তর-পূর্ব দিল্লীর ব্রিজপুরী এলাকার একটি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার এই স্কুলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল তাণ্ডবকারীরা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাই স্কুলেই রাখা ছিল প্রশ্নপত্র ও আরও অনেক সরঞ্জাম। তবে এখন ছাই ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। যদিও কপাল ভাল যে ঘটনার সময় স্কুলে ছিল না কোনও পড়ুয়া। নইলে বড় বিপদের সম্ভাবনা ছিল। তবে তাণ্ডবকারীরা যখন স্কুলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল সেই সময় ছিলে নিরাপত্তাকর্মীরা। কোনওরকমে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন তাঁরা। ওই স্কুলের ক্যাশিয়ার জানিয়েছেন। ঘটনার দিন স্কুলের ছিলেন তিনি। আচমকাই বিকেলের দিকে ২৫০-৩০০ জনের একটি দল হাজির হয় স্কুলের সামনে। কী করা উচিত বুঝতে না পেরে গেট ছেলে পালিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষী।
তারপরেই স্কুলের গেটে আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। দাউদাউ আগুন ছড়িয়ে পরে নিমেষেই।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনা ঘটে বিকেল ৪টের সময়। এদিকে সন্ধে ৮টা পর্যন্ত স্কুল চত্বরে না এসেছে কোনও দমকলের গাড়ি, না এসেছে পুলিশ। এক শিক্ষকের কথায়, ‘বারবার আমরা দমকল আর পুলিশের ফোন করছিলাম। কিন্তু কেউই এসে পৌঁছতে পারেনি। চারপাশে যা অবস্থা হয়তো সেসব সামাল দিয়ে স্কুলে আসতেই ওদের ৪ ঘণ্টা লেগে গিয়েছে।’ শিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্কুলগেটে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে তাণ্ডবকারীরা। লুঠপাট চালায় স্টাফরুমে ঢুকে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লকার হাতড়ে যা পেয়েছে সব নিয়ে গিয়েছে তারা। বইপত্র-খাতা-ফাইল মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছিল সবকিছুই। এক শিক্ষকের কথায়, ‘দেখে মনে হচ্ছিল মুহূর্তের মধ্যে যেন ঝড় বয়ে গিয়েছে।’