ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রের হাল-হকিকত বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় বিনিয়োগ বাড়ানোকে পাখির চোখ করে বারবারই গিয়েছেন বিদেশ সফরে। সর্বত্রই শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে তাঁর আহ্বান ছিল, বাংলায় বিনিয়োগের সহায়ক পরিবেশ রয়েছে। আপনারা সেখানে লগ্নী করুন। এই নিয়ে বারবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হলেও তাদের মুখে ঝামা ঘষে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন করে বাংলায় লগ্নীর জোয়ার এনেছেন মমতা। আর বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে গত কয়েক বছরে শিল্পে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে, তার মধ্যে ৪ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার পুঁজি ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ হয়ে গিয়েছে।
শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে গত আট বছরে রাজ্যে মোট ২২,২৬৭ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগও রয়েছে। এই বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টি মান্যতা পেয়েছে কেন্দ্রের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের রিপোর্টেও। এরই পাশাপাশি বিভিন্ন সমবায় এবং বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বাংলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যে পরিমাণ বিনিয়োগ এসেছে, তাও দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বলে মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। সব মিলিয়ে মমতার নেতৃত্বে যে রাজ্যে শিল্প-বান্ধব পরিবেশ ফিরেছে, রাজ্যে মোট বিনিয়োগ পরিমাণ এবং সে অনুযায়ী শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু হওয়াটা সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন বণিকসভাও এই বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, দেশ ও বিদেশের বিনিয়োগ টানতে মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন যে ফলপ্রসূ হয়েছে, প্রায় সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ সেটিই প্রমাণ করছে।
শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মা-মাটি-মানুষ সরকারের আমলে বিভিন্ন সমবায় ও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের মাধ্যমে রাজ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পস্থাপনে এখনও পর্যন্ত বিনিয়োগ হয়েছে ২,৪৩,৪১৯ কোটি টাকা। বিনিয়োগের নিরিখে যা গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এরই সঙ্গে কুটির শিল্পেও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে বাংলা। শুধু তাই নয়। আর্থিক মন্দায় দেশের শিল্পস্থাপন সূচক যখন নিম্নমুখী, ঠিক সেই সময়ে রাজ্যের সূচক ঊর্ধ্বগামী। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে গোটা দেশে শিল্পস্থাপন সূচক ০.৬ এসে পৌঁছেছে। এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পস্থাপন সূচক পাঁচ গুণ বেড়ে হয়েছে ৩.০।