গত বছর পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে গেছে চীন। কাশ্মীর ইস্যু তো বটেই। সাম্প্রতিক কালে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যত বারই পাক সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উঠেছে, ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। কিন্তু, এবার সেই বেজিংই নিজেদের অবস্থান থেকে কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে পাশে দাঁড়াল নয়াদিল্লীর। ভারত-সহ আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান দেশগুলি সন্ত্রাস দমনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে যে বার্তা দিতে চলেছে, সেই তালিকায় এবার যোগ দিচ্ছে চীনও। দলে যোগ দিয়েছে সৌদি আরবও।
প্রসঙ্গত, জঙ্গীদের অর্থ সরবরাহ ও কার্যকলাপের উপর নজরদারি এবং ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে এফএটিএফ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংস্থা। সন্ত্রাসে মদত দেওয়া, অর্থ জোগানোর অভিযোগে ২০১৮ সাল থেকে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এই এফএটিএফ। এই এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকায় থাকার অর্থ, সেই দেশকে নিরাপদ বলে মনে করা হয় না। সন্ত্রাসে মদত দেওয়া ও অর্থ জোগানের অভিযোগে ধূসর তালিকাভুক্ত করার অর্থ সেই দেশকে সতর্কবার্তা দেওয়া। এর পরের ধাপই কালো তালিকা। সন্ত্রাস দমনে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে সংশিষ্ট দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারে এফএটিএফ।
দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় রেখে সন্ত্রাস দমনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বহুবার বার্তা দিয়েছে এই সংস্থা। কিন্তু কার্যত কোনও কাজ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আগামী জুন মাসে বসছে এফএটিএফ-এর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন। তার আগে সন্ত্রাস দমনে আন্তর্জাতিক মহলে নজরে পড়ার মতো কোনও কড়া ব্যবস্থা না নিলে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে এফএটিফ। কড়া হাতে শীর্ষ জঙ্গী সংগঠনের নেতাদের বিচার ও শাস্তির জন্য পাকিস্তানকে বলা হতে পারে। সূত্রের খবর, চীন ও সৌদি আরবের এই অবস্থান বদলের জেরে এ বার এটা কার্যত নিশ্চিত যে, জুনের আগে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাতেই রাখা হবে। খুব শীঘ্রই ফের এ নিয়ে সরকারি ভাবে ঘোষণা হতে পারে।
উল্লেখ্য, সদস্য দেশগুলির মধ্যে চীন ও সৌদি আরব সন্ত্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে বরাবর। কিন্তু তারাও এবার একজোট হওয়ায় পাকিস্তানের বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে কূটনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ। তবে শেষ মুহূর্তে তালিকা থেকে সরে গিয়েছে একমাত্র তুরস্ক। বাকি সব দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এককাট্টা। এটা ভারতের কাছে সুখবর তো বটেই। আর এর পাশাপাশি চীনের এই অবস্থান বদলও ভারতের কাছে অবশ্যই স্বস্তিদায়ক। যাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলও।