বাংলা ছবির অন্যতম মহাতারকা ছিলেন তিনি। রুপোলি পর্দার মত রাজনীতিতেও নিজের ক্যারিশ্মায় চার বার নির্বাচনে জিতেছেন। কালের নিয়মে হাজার বিতর্কে জড়ালেও, আজ তাঁর প্রয়াণে চোখের জলে ভিজছে আপামর বাঙালি। সাংসদ এবং অভিনেতা তাপস পালের অকাল প্রয়াণে তাঁকে নিয়েই না বলা কথা এবার বললেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
শোভনদেব বলছিলেন, ‘আটের দশক সেটা। মহানায়ক উত্তম কুমার মারা গিয়েছেন। টলিউড রীতিমত খাঁ খাঁ করছে। তেমন অবস্থা থেকে বাংলা ছবিকে টেনে তুললেন এক নিষ্পাপ মুখের অভিনেতা। তিনি তাপস পাল। একের পর এক ছবি করছেন। দর্শক ভালোবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন তাঁকে। কেন? শুধুমাত্র পাশের বাড়ির ছেলে-র মতো ছিলেন বলে। এরপর ২০০১ সালে আলিপুর বিধানসভা কেন্দ্র। আমার বাড়ির এলাকা থেকে প্রথম নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হলেন তাপস পাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বুঝতে পারেননি, এভাবে একজন তারকা অভিনেতা ভোটযুদ্ধে জিতে ফিরবেন। তারপরে নদিয়ার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের পরপর দু-বারের জয়ী সাংসদ।’
সুব্রত মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘তাপসের অফিস ছিল আমার বাড়ির একদম পাশেই। ফলে, ওঁর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল খুব স্বাভাবিক ভাবেই। সেই অন্তরঙ্গতা একসময় আত্মীয়তায় পরিণিত হয়েছিল। আমার স্ত্রী ওঁকে ভাইফোঁটা দিতেন। মাত্র ৬১ বছর বয়সে সেই মানুষটা আচমকাই চলে গেল। ভাবতে ভীষণ খারাপ লাগছে।’
তিনি আরও বলেন যে, ‘দুবারের বিধায়ক ছাড়াও কৃষ্ণনগরের সাংসদ হিসেবে তিনি অনেক কাজ করেছেন। আর মানুষের কথা ভীষণ শুনতেন দরদ দিয়ে। তাঁকে একটু কাছ থেকে দেখার জন্য উদ্বেল হত জনতা। অন্যের ভালর জন্য নিজে কষ্ট করতে পারতেন। আর কখনও তাঁর মুখের হাসি মুছত না। আজও নিজে হেসে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন। এ এক অদ্ভুত সমাপতন।’