রাজ্যকে না জানিয়ে বর্ষায় অতিরিক্ত জল ছাড়ছে ডিভিসি। বারংবার চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে জল ছাড়ার বিষয়টি আগে জানাতে বলা হলেও কোনও পদক্ষেপ করে না কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। এর প্রতিবাদে রাজ্যসভায় সরব হলেন নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে ডিভিসি’র অতিরিক্ত জল ছাড়া চলবে না- রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবার এই দাবি তুললেন ঋতব্রত।
বর্ষার বৃষ্টি, সঙ্গে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বাঁধ থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে রাজ্যর অনেক জেলা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। প্রতি বর্ষায় বাংলার চেনা ছবি। একই হাল হয় প্রতিবেশী বিহার ও ঝাড়খণ্ডের। বহু দিন সংস্কার না হওয়ার ফলেই ডিভিসির জলাধারগুলিতে পলি জমে গিয়েছে। ফলে কমেছে নাব্যতা। বেশি বৃষ্টি হলেই অতিরিক্ত জল তাই ধরে রাখা যায় না জলাধারগুলিতে। যে কারণে সংরক্ষণের বদলে বর্ষায় অতিরিক্ত জল ছেড়ে দেয় ডিভিসি। যার জেরে ভেসে যায় বাংলার বিস্তীর্ণ অংশ।
কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিভিসিকে তাদের জলাধার সংস্কারের আবেদন জানিয়ে একাধিক চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে কাজ হয়নি। অন্যদিকে, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই বর্ষায় অতিরিক্ত জল ছেড়ে দেওয়ায় বিপদে পড়তে হয় রাজ্যবাসীকে। বিষয়টি জানিয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে সজাগ করা হলেও ফল যেকে সেই। এক্ষেত্রেও বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই বঞ্চনা প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় সরব হন নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ডিভিসি তার বিভিন্ন জলাধার বহুদিন ড্রেজিং না করায় নাব্যতা কমে গিয়েছে। ফলে দু লক্ষ কিউসেক জল ধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে জলাধারগুলির। নাব্যতা কমায় বর্ষায় অতিরিক্ত জল ধরে না রাখতে পেরে তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বন্যায় ভেসে যাচ্ছে বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে এই জল ছাড়ায় বিপদে পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।’ পরিসংখ্যাণ অনুযাই গত বর্ষায় ডিভিসির জল ছাড়ায় বাংলার ১০৬টি ব্লক জলের তলায় ছিল।
এই পরিস্থিতি বদলের জন্য ডিভিসির জলাধারগুলির অবিলম্বে সংস্কার ও রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে ডিভিসি’র অতিরিক্ত জল ছাড়া বন্ধের দাবি জানান সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।