পাকস্থলীতে ঢুকেছে পাঁক, ভেঙেছে পাঁজরের হাড়। কাজ করা বন্ধই করে দিয়েছে ফুসফুস, কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে হৃদযন্ত্রের কাজ। সব মিলিয়ে জাঁকিয়ে বসছে প্রাক-কোমার লক্ষণ। হুগলির পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় এমনই অবস্থা কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি দুই খুদে পড়ুয়ার। জীবনমরণ নিয়ে চলছে কার্যত যুদ্ধ। মস্তিষ্কে বাড়তি অক্সিজেন পৌঁছাতে বসেছে একমো যন্ত্র। তবুও কাটেনি বিপদ, ফেরেনি জ্ঞান। ক্রমশ ভেঙে পড়ছে দুই খুদের পরিবার। শুক্রবার রাতে দুই খুদে পড়ুয়ার খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
রাতে এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, মণিময়বাবুর কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান ওই দুই পড়ুয়ার কী রকম চিকিৎসা হচ্ছে? কতটা তারা সাড়া দিচ্ছে চিকিৎসায়? সূত্রের খবর, এর পরেই তিনি এসএসকেএমের অধিকর্তাকে ওই দুই পড়ুয়ার চিকিৎসায় আর কী কী করা যায় সে বিষয়ে আরও তৎপর হতে নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য গতকালই শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে গ্রিন করিডর তৈরি করে এই দুই পড়ুয়াকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কল্যাণবাবু তখন থেকেই রয়ে গিয়েছেন হাসপাতাল চত্বরেই।
এদিকে দিব্যাংশু ভগত ও ঋষভ সিংহ -র চিকিৎসার জন্য শুক্রবারই এসএসকেএম হাসপাতালে গঠন করা হয়েছে ৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। কিন্তু দুই পড়ুয়ার যা অবস্থা তাতে এখন এই চিকিৎসক প্যানেলের হাত গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা নেই। কারণ দুই খুদে পড়ুয়ার শরীরের এই অবস্থায় তারা অস্ত্রোপচারের চাপ নিতে পারবে না। অস্ত্রোপচার সম্ভব হলে পাঁজরের ভাঙা হাড় জোড়া দেওয়ার কাজ করতে পারতেন চিকিৎসকেরা। তাতে ফুসফুসকে ফের কাজ করার জায়গায় নিয়ে আসা যেত। কিন্তু সে রাস্তা এখন কার্যত বন্ধ। এই অবস্থায় দুই পড়ুয়ার মস্তিষ্কে যাতে তাজা অক্সিজেন যাওয়া বন্ধ না হয় তার জন্য বসানো হয়েছে একমো যন্ত্র। রাজ্যে এই প্রথম সরকারি কোনও হাসপাতালে এই যন্ত্র বসলো। তবুও বিপদ কাটছে না এই দুই পড়ুয়ার।