বুধবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবাইকে সততার সঙ্গে কর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আফশোস করেছিলেন, ১৩০ কোটির দেশে মাত্র দেড় কোটি মানুষ আয়কর দেন। আসলে এভাবেই দেশে কর ফাঁকির বাড়বাড়ন্ত বোঝাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা করতে গিয়েই হল হিতে বিপরীত। মোদীর মন্তব্যের রেশ ধরে বিরোধীদের প্রশ্ন, বাকিরা যদি কর ফাঁকিই দিয়ে থাকেন, তা হলে ছয় বছর ধরে মোদী কী করছেন? কর ফাঁকি ও কালো টাকা নিশ্চিহ্ন করতে তিনি যে নোটবন্দী করেছিলেন, তার কী হল? বিরোধীদের যুক্তি, ১৩০ কোটি মানুষের দেশে যদি মাত্র ১.৫ কোটি মানুষের আয় ৫ লক্ষ টাকার বেশি হয়, তা হলে তাঁরাই আয়কর দেবেন। এতে অস্বাভাবিকতা কোথায়?
প্রসঙ্গত, বুধবার মোদী জানিয়েছিলেন, ১৩০ কোটির দেশে মাত্র দেড় কোটি মানুষ আয়কর দেন। তার মধ্যে ৩ লক্ষ লোক বছরে ৫০ লক্ষ টাকার বেশি আয় দেখান। বছরে ১ কোটি টাকার বেশি আয় বলে জানিয়েছেন মাত্র ২,২০০ জন পেশাদার। অথচ সুপ্রিম কোর্টেই এর থেকে বেশি কোটিপতির দেখা মিলবে বলে কটাক্ষ করেন তিনি। এ নিয়েই মোদীকে পাল্টা কটাক্ষ করে বিরোধীরা বলছেন, দেশের সব মানুষই চোর। অন্য দিকে তাঁর দল নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঝোলায় পুরছে। যদি কেউ কর জমা না করে থাকেন, তা হলে মোদী ছয় বছর ধরে কী করছেন? উনি তো নোট বাতিল করে দাবি করেছিলেন, কালো টাকা ও কর ফাঁকি শেষ হয়ে যাবে!
কংগ্রেসের পরিসংখ্যান বিভাগের নেতা প্রবীণ চক্রবর্তীর কথায়, ‘দেশের মানুষের গড় আয় বছরে মাত্র ১.৩৫ লক্ষ টাকা। মাত্র দেড় কোটি মানুষেরই আয় ৫ লক্ষ টাকার বেশি। সে কারণে তাঁরাই কর মেটান।’ আয়কর দাতা ও কোটিপতির সংখ্যা নিয়ে মোদীর দেওয়া পরিসংখ্যানে গড়বড় রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এর আগে আয়কর দফতরই জানিয়েছিল, ২০১৮-১৯-এ ৯৭,৬৮৯ জন তার আগের বছরে তাঁদের বার্ষিক আয় ১ কোটি টাকার বেশি দেখিয়েছিলেন।