১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯। ভালবাসার দিনে রক্তাক্ত হয়েছিল ভূস্বর্গ। পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি ধাক্কা মেরেছিল সিআরপিএফ জওয়ানদের বাসে। ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৪০ জন জওয়ানের। নিরাপত্তার ফাঁক গলে কোথা থেকে এসেছিল এত বিস্ফোরক, ঘটনার একবছর পরেও অন্ধকারে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।
জইশ-এ-মহম্মদের জঙ্গি আদিল আহমেদ দার জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ের উপর গাড়ি নিয়ে সোজা ধাক্কা মেরেছিল সিআরপিএফ জওয়ানদের বাসে। ঘটনার তদন্তে নেমে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রায় ২৫ কেজি প্লাস্টিক বিস্ফোরক ব্যবহার হয়েছিল। এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, এত পরিমাণ বিস্ফোরক সাধারণত সেনা ভাণ্ডারে মজুত থাকে, যত্রতত্র কিনতে পাওয়া যায় না। এক এনআইএ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরকের মধ্যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, নাইট্রো-গ্লিসারিন এবং আরডিএক্স ছিল। এমন বিস্ফোরক সচরাচর জোগাড় করা মুশকিল। এখানেই দানা বেঁধেছে রহস্য। তাহলে কি এর পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে?
পুলওয়ামা কাণ্ডের একবছর পরও এনআইএ এখনও চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি। তাঁদের বক্তব্য, অভিযুক্তরা সকলেই মৃত। মূল দুই চক্রী মুদ্দাসির আহমেদ খান এবং সাজ্জাদ ভাট নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে খতম হয়েছে গতবছরই। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ঘটনায় অনেক রহস্যের সমাধান আজও অমিল। জঙ্গিদের সাহায্য করার পিছনে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। যে গাড়িটা হামলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটা বহু হাত ঘুরে সাজ্জাদের হাতে আসে। সাজ্জাদ এনকাউন্টারে খতম হওয়ায় অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।
সূত্রের খবর, জঙ্গিদের অপারেশনের জন্য কারা টাকা জুগিয়েছিল, গাড়িটি কীভাবে তারা পেল, কোথা থেকে এত বিস্ফোরক ঢুকল কাশ্মীরে, সব প্রশ্নের উত্তর বছর ঘোরার পরও অধরা। তবে ইন্টেলিজেন্সের ব্যর্থতা ছিল না তা অস্বীকার করছেন না এনআইএ-এর গোয়েন্দারা। যদিও গতবছর জুন মাসে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি লিখিত উত্তরে জানিয়েছিলেন, পুলওয়ামা কাণ্ডে ইন্টেলিজেন্সের কোনও ব্যর্থতা নেই। কিন্তু প্রকৃত দোষী কারা তার কোনও সদুত্তর নেই সরকারের কাছে।