সোমবার বিধানসভায় ২০২০-২১ সালের রাজ্য বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। স্বাভাবিকভাবেই উন্নয়নের লক্ষ্যে দরাজ ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে অর্থমন্ত্রীকে। আর উন্নয়নমূলক খাতে সব থেকে বেশি অর্থ বরাদ্দ হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জন্য।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণের জন্য বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে ২০ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। গ্রামীণ এলাকায় একশো দিনের কাজ, বাংলা আবাস, বাংলা গ্রামীণ সড়ক, মিশন নির্মল বাংলা প্রভৃতি জনস্বার্থ জড়িত প্রকল্পগুলি চালাতে এই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
আবার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ হয়েছে, ৮৪৩০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় ভোট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। পুরসভাগুলি পুর দফতরের মাধ্যমে উন্নয়নের টাকা পেয়ে থাকে। তবে উন্নয়ন খাতে অর্থ বরাদ্দের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। তাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮৭৫০ কোটি টাকা।
খাদ্য দফতরের মোট বরাদ্দ ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে এর মধ্যে ৩৫২৮ কোটি টাকা আসছে সেন্ট্রাল সেক্টর প্রকল্পের জন্য। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র এই অর্থ দিচ্ছে। রাজ্যের নিজস্ব খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের পুরো খরচ ও জাতীয় প্রকল্পের খরচের একটা অংশ বহন করে রাজ্য। খাদ্য দফতরের জন্য উন্নয়নে রাজ্য প্রকল্প খাতে দেওয়া হয়েছে ৪৮৬২ কোটি টাকা। কৃষি দফতর পাচ্ছে ৫৮৬০ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যদপ্তর উন্নয়ন খাতে ৪৫৪৮ কোটি টাকা, পূর্ত দফতর ৩৯০০ কোটি টাকা, নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর ৫৪৮৬ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে পেয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩৬০০ কোটি টাকা। সেচ দফতর পেয়েছে ২৮২০ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরের জন্য রাজ্য উন্নয়ন প্রকল্পের খাতে বরাদ্দ হয়েছে মোট ৯০ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। সব দফতর মিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিজস্ব স্কিমের জন্য বরাদ্দ আছে ৪৪৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খাদ্য দফতরের বরাদ্দ ৩৫২৮ কোটি টাকা।
বাজেট পুস্তিকায় সব দফতরের উন্নয়নমূলক খরচের পাশপাশি প্রশাসনিক খরচের হিসেব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক খরচের একটা বড় অংশ হয় বেতন, ভাতা প্রভৃতি দিতে। বাজেটে প্রশাসনিক খাতে দফতরগুলির জন্য মোট বরাদ্দ হয়েছে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। প্রশাসনিক খাতে সব থেকে বেশি অর্থ (২০ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা) পেয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর।