আগের ম্যাচে লাস্ট বয়ের কাছে হারার ছন্দ ধরে রাখল ইস্টবেঙ্গল! ইন্ডিয়ান অ্যারাজের কাছে হারের পর শুক্রবার মারিও রিবেরার টিম সেই ০-১ হারল লিগের দশম স্থানের টিম আইজল এফসির কাছে। মিজোরামের এই টিমের কাছে আগে কখনও ঘরের মাঠে হারেনি লাল হলুদ ব্রিগেড। এই হারে কার্যত অনিশ্চিত ইস্টবেঙ্গলের আইলিগের আশা।
আশ্চর্যজনক ভাবে লাল-হলুদ শিবিরের কোচ মারিয়ো রিভেরা ৪-৫-১ ছকে দল সাজিয়েছিলেন। ঘরের মাঠে ফরোয়ার্ডে একা আনসুমানা ক্রোমা! রক্ষণে মার্তি ক্রেসপির পরিবর্তে আশির আখতার। স্পেনীয় ডিফেন্ডারকে অবশ্য আঠারো জনেই রাখেননি তিনি। মারিয়ো বলে দিলেন, ‘‘সেরা আঠারো জনকেই বেছে নিয়েছিলাম। কারণ, এই সপ্তাহে আমার পরিকল্পনায় ক্রেসপি নেই।’’ স্পেনীয় ডিফেন্ডারের বিদায় কি তা হলে নিশ্চিত? মারিয়ো বললেন, ‘‘দল নিয়ে কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেব।’’ ইতিমধ্যেই ক্রেসপির বদলে জনি আকোস্তা ও মার্কোস খিমেনেস দে লা এসপারার জায়গায় এনরিকে এসকুয়েদাকে আনার দাবি উঠে গিয়েছে। হতাশ মারিয়ো বলছেন, ‘‘এনরিকের চোট রয়েছে। জনি নিজের দেশের ক্লাব ফুটবলে ব্যস্ত। ইচ্ছে থাকলেও ওদের আনার উপায় নেই।’’
লাইবেরিয়ান ক্রোমা এ দিন শুরু থেকে নামলেন। ২৩ মিনিটে ব্র্যান্ডনের থেকে থ্রু পেয়ে একা গোলকিপারকে পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হলেন। ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’র মতোই ক্রোমা বোঝালেন, তিনি ‘ছোট টিমেরই নায়ক। বড় টিমে নয়।’ আইজলে খেলেছিলেন ক্রোমা। তাই তাঁর সম্পর্কে যথেষ্ট হোমওয়ার্ক করা ছিল আইজল কোচ স্ট্যানলির। তিনি ক্রোমাকে বড় চেহারার রিচার্ড আর আদজেইকে দিয়ে মার্ক করাতেই সব জারিজুরি খতম কলকাতা লিগের সর্বোচ্চ স্কোরারের। তবে তাঁর থেকেও বেশি ব্যর্থ কোলাদো ও মেরা। দু’জনে মিলে গোটা পাঁচেক ফ্রিকিক পেয়েও তা আইজলের তেকাঠিতে রাখতে পারেননি। আইজল পাল্টা আক্রমণে আসছিল।
ইস্টবেঙ্গল প্রথম গোল করার সুযোগ পেল ম্যাচের ২৩ মিনিটে। কিন্তু ক্রোমার শট পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। দ্বিতীয় সুযোগ ৪২ মিনিটে। অবিশ্বাস্য ভাবে আইজল গোলরক্ষক জ়োথানমাওয়াইয়ার গায়ে বল মারেন ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকা। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র এক বারই গোল করার সুযোগ তৈরি হয়েছিল! এ বারও ব্রেন্ডন সামনে একা গোলরক্ষককে পেয়ে গোল করতে পারেননি। অর্থাৎ ঘরের মাঠে পুরো ম্যাচে মাত্র চার বার গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পেরেছিল ইস্টবেঙ্গল!
গোল হবেই বা কী করে? পরিকল্পনা, পারস্পরিক বোঝাপড়া থেকে আত্মবিশ্বাস— সবই তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে লাল-হলুদ শিবিরে। সংক্রমণ এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে শুক্রবার প্রথম একাদশে পাঁচ ফুটবলার পরিবর্তন করেও রোগ সারাতে ব্যর্থ মারিয়ো। লাল-হলুদ রক্ষণের ব্যর্থতাতেই ৭৭ মিনিটে ঠান্ডা মাথায় গোল করে আইজলকে এগিয়ে দেন ভেরন।
২৬ বছর বয়সি আর্জেন্টিনীয় স্ট্রাইকার গোকুলম এফসিতে ট্রায়াল দিতে এসেছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে সই করান আইজল কোচ। শুক্রবার লিয়োনেল মেসির দেশের ভেরনই ম্যাচের সেরা রোচারজ়েলার সঙ্গে জুটি বেঁধে মশাল নেভালেন। ম্যাচের পরে স্ট্যানলি বলছিলেন, ‘‘এই ইস্টবেঙ্গলকে দেখে আমি বিস্মিত।’’