সিএএ-র সমর্থনে প্রচারে গিয়ে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি–র আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ ও তাঁর সহকর্মীরা। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি প্রচার বন্ধ করে তাঁদেরকে এলাকা ছাড়তে হয়। ঘটনাটি ঘটেছে আরামবাগ পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁটাবনি এলাকায়।
এদিন বিজেপি-র জেলা সভাপতি দলীয় কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে ওই ওয়ার্ডে ‘গৃহসম্পর্ক অভিযান’–এ বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন। তখনই গ্রামের মানুষ তাঁদেরকে ঘিরে প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা অভিযোগ তোলেন, বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কৌশলে টাকা–পয়সা নিয়ে নিচ্ছে। তারপর সেই টাকা নিজেদের পকেটে ভরছে। নোটবন্দীর নামে দেশের সাধারণ মানুষকে চরম বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষ প্রশ্ন তোলেন, কেন প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে? পেট্রোলের দাম কেন এত বেড়ে গেল? ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিরই বা কি হল? বিজেপি নেতাদের তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিজেপি গত পাঁচ–ছয় বছর ধরে দেশের সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে চলেছে। এনআরসি, সিএএ-র নাম করে দেশে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করছে। দাঙ্গা লাগাতে চাইছে। সাধারণ মানুষের উন্নতির কথা তারা ভাবছে না। কেবল ধর্ম নিয়ে বিভেদ তৈরি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে।
প্রবল বিক্ষোভের মুখে এদিন বিজেপি সভাপতি মুখে কুলুপ এঁটে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি গ্রামবাসীদের কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। গ্রামের অনেকেই মন্তব্য করেন, বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকতেই গ্রামে গ্রামে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এমনটা সিপিএমও করত না। গ্রামবাসীরা বিমানবাবুর মুখের ওপর পরিষ্কার বলে দেন, ‘আপনাদেরকে কোনওদিন ভোট দেব না। এরাজ্যে বা পুরসভায় আপনারা ক্ষমতায় আসুন আমরা চাই না।’
প্রবল বিক্ষোভের মুখে বাধ্য হয়ে বিজেপি–র নেতা–কর্মীরা এলাকা ছেড়ে চলে যান। তখন গ্রামবাসীরা স্লোগান দিতে থাকেন, বিমান ঘোষ দূর হটো, বিজেপি দূর হটো। যদিও এ প্রসঙ্গে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘কোনও গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখাননি। প্রচার শেষ করে আমরা বাড়ি ফিরছিলাম। তখন তৃণমূল নেতারা এলাকার কিছু মানুষকে উত্তেজিত করে এ কাজ করেছে। সাধারণ মানুষ আমাদের পাশেই আছেন।’