আর দিন সাতেক পরেই কেন্দ্রীয় বাজেট। তার আগে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আমজনতার ঘাড় থেকে করের বোঝা কমানোর পরামর্শ দিলেন খোদ প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে। সেই সঙ্গে বললেন, অত্যধিক কর চাপিয়ে দেওয়া এক ধরনের সামাজিক অবিচার, যা সরকার নিজেই করে থাকে তার নাগরিকদের সঙ্গে। পাশাপাশি কর ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ভারতের প্রাচীন আইনের উদাহরণ টেনে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মৌমাছি যে ভাবে কোনও আঘাত বা ক্ষতি না-করে ফুল থেকে মধু আহরণ করে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ঠিক সে ভাবেই কর আদায় করা উচিত।’’
শুক্রবার দিল্লীতে ইনকাম ট্যাক্স অ্যাপেলেট ট্রাইবুনালের ৭৯তম প্রতিষ্ঠা দিবসে গিয়েছিলেন বোবদে। সেখানে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “আয়কর বাড়িয়ে দেওয়ার মানে হল নাগরিকদের উপর অবিচার করা। জনগণের কাছ থেকে বেশি পরিমাণ আয়কর আদায় করা জনগণের সামাজিক অধিকারকে খর্ব করে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত জনগণের উপর থেকে অতিশয় করের বোঝা কমিয়ে দেওয়া।” তিনি আরও বলেন, “ কর ফাঁকি দেওয়া যেমন দেশের নাগরিকদের প্রতি সামাজিক অবিচার, তেমনই ইচ্ছেমতো বা অত্যধিক কর বসানোও সরকারের তরফে এক ধরনের সামাজিক অবিচারেরই ফল। কর দাতা ও কর গ্রহীতার পারস্পরিক মেলবন্ধনেই দেশের অর্থনীতির উন্নতি হতে পারে। সরকারের উচিত দেশের সার্বিক উন্নয়নের দিকে খেয়াল রাখা।”
ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধীদের ক্রমাগত আক্রমণের মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বেকারত্ব এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দেশে অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। দেশে ‘আর্থিক জরুরি অবস্থা’ সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এই মুহূর্তে প্রবল সংকটের মধ্যে দিয়ে চলেছে ভারতীয় অর্থনীতি। মন্দার ধাক্কা থাবা বসিয়েছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির ওপরে। এর মধ্যে গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মত হয়ে দাঁড়িয়েছে মুদ্রাস্ফীতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে টাকার ক্রমশ অবমূল্যায়ন। গত ডিসেম্বরে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৩৫ শতাংশ, যা গত সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর এর ফলশ্রুতিতে নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা আম আদমির। বিশেষত, পেঁয়াজ-সহ সবজির মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলেছে। এমন একটি সময়ে কর হ্রাসের পক্ষে সওয়াল করলেন প্রধান বিচারপতি।