২০১৮ সালের জুলাই মাসে বড়বাজারের কল্যাণ রায় বর্মণের কাছ থেকে ৯০ লাখ টাকা উদ্ধার হয়। সেই মামলায় আগেই নাম জড়িয়েছিল বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের। তার পাশাপাশি হাওয়ালা মামলায় নাম জড়ানোয় গত সপ্তাহে কালীঘাট থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। আর এবার লাভপুরের সিপিএম কর্মী তিন ভাই খুনের মামলায় অভিযুক্ত মুকুলকে বৃহস্পতিবার ফের পুলিশের ম্যারাথন জেরার মুখে পড়তে হল। চলতি মাসের ১ তারিখও ওই মামলায় চার্জশিটে নাম থাকা তাঁকে ডেকে টানা দু’ঘণ্টা জেরা করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সিউড়ি থানায় ডেকে দু’দফায় মুকুলকে প্রায় ৬ ঘণ্টা জেরা করে পুলিশ। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি (ডিইবি), ওসি লাভপুর, ওসি ডিআইবি।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে লাভপুরের বুনিয়াডাঙা গ্রামে বালিরঘাটের সালিশি সভায় নিজের বাড়িতে ডেকে সিপিএম কর্মী তিন ভাই জাকের আলি, কোটন শেখ ও ওসুদ্দিন শেখকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে মনিরুল ইসলাম ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। সেসময় মাস তিনেক হাজতবাস করতে হয় লাভপুরের বিজেপি বিধায়ককে। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের পর পরই নিহতের পরিবার কলকাতা হাইকোর্টে পুনর্তদন্তের আবেদন জানালে সেপ্টেম্বরে বিচারপতি মধুমতী মিত্র রাজ্য পুলিশকে জেলা পুলিশ সুপারের তদারকিতে ‘ফার্দার ইনভেস্টিগেশন’ করার নির্দেশ দেন। তারপর গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফের তদন্ত করে বোলপুর আদালতে সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট জমা দেয় লাভপুর থানা। যেখানে মনিরুল ইসলাম ও প্ররোচনা দেওয়ার জন্য অধুনা বিজেপি নেতা মুকুল রায়-সহ মোট ৬৩ জনের নাম বীরভূম পুলিশ। তার পরেই উভয়ের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বোলপুর আদালত।
এদিকে, কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন মুকুল রায়। আগাম জামিন মঞ্জুর না হলেও ১৬ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ পাঁচ সপ্তাহের রক্ষাকবচ দেন ওই বিজেপি নেতার জন্য। নির্দেশে বলা হয়, মুকুল রায়কে ওই সময়কালের মধ্যে গ্রেফতার করা যাবে না। মুকুল রায় লাভপুর, বোলপুর থানা এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে পুলিশ তাঁকে ডাকলে তিনি তদন্তে সহযোগিতা করবেন। পুলিশ সূত্রের খবর, আদালতের ওই নির্দেশের পরে মুকুলকে প্রথমে দুবরাজপুরে, তারপর সিউড়িতে ডেকে জেরা করা হয়েছে।