সোমবার ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে পাহাড়ে এসেছেন তিনি। এই মুহূর্তে রয়েছেন দার্জিলিংয়ে। আজ দার্জিলিং ম্যালেই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই হিন্দু মহাসভা নিয়ে নেতাজির বক্তব্যকেই হাতিয়ার করে সরাসরি আক্রমণ করলেন বিজেপিকে। পাশাপাশি, দেশনায়কের মৃত্যু রহস্য উন্মোচনে কেন্দ্রের গড়িমসি নিয়েও তুললেন প্রশ্ন। এভাবেই সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৩ তম জন্মবার্ষিকী পালনে সাঁড়াশি আক্রমণে কেন্দ্রকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলের পর রাজ্য সরকারের তরফে নেতাজির জন্মদিন পালিত হয় পাহাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। দার্জিলিংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে দেশনায়কের মূর্তিতে মাল্যদান করে জন্মদিন পালন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্তমানের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে তার তুলনা টানলেন। বলেন, ‘নেতাজি ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে সওয়াল করতেন। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা ছিল নেতাজির। যাঁর এই ক্ষমতা থাকে, তিনিই প্রকৃত দেশনেতা। তিনি হিন্দু মহাসভার ঘোর বিরোধী ছিলেন।’
স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সচেতন মানুষমাত্রই জানেন হিন্দু মহাসভা নিয়ে নেতাজির মনোভাব। তিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন, হিন্দু মহাসভা তৈরি হলে তিনি তাঁর বিরোধিতা করবেন। প্রয়োজনে ভেঙেও দেবেন। বর্তমানের অস্থির পরিস্থিতি, দেশজুড়ে গৈরিকীকরণের প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী সেই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। উগ্র হিন্দুত্ববাদের নামে হিন্দু ধর্মের বদনাম করছে বিজেপিই।’
উল্লেখ্য, জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কর্ণাটক-উত্তরপ্রদেশে পুলিশের বিরুদ্ধে বারবার উঠছে অতিরিক্ত দমনপীড়নের অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হয়ে একাধিক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুভাষচন্দ্রের বহু পরিচিত উক্তিকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে বিঁধলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘নেতাজি বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।’ আর এখন মানুষের রক্ত নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।’ তাঁর মতে, নেতাজি রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। এখন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সরব হলেই, নিজেদের নাগরিকত্বের দাবি রক্ষা করতে গেলেই মানুষের রক্ত ঝরছে।