দিল্লীর বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধছে জেডিইউ। সোমবারই দুই দলের আঁতাত চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছিল দলেরই একাংশ। মঙ্গলবার জেডিইউয়ের প্রবীণ নেতা পবন কে বর্মা সরাসরিই জেডিইউ সুপ্রিমো তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চিঠি দিয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বিজেপির সঙ্গে তাঁদের দল জোট বাঁধায় তিনি তাজ্জব। কেন জোট বাঁধা হল, সে ব্যাপারেও তিনি নীতিশের কাছে জানতে চান। দলের অন্দরে এ হেন ক্ষোভের মুখে পড়ে এবার পবনের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ মন্তব্য করলেন নীতিশ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে পবনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘উনি যেতে পারেন। এবং অন্য যে কোনও পার্টিতে যোগ দিতে পারেন। আমার আশীর্বাদ রইল।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দলের সকলকে কার্যত হতবাক করে নীতিশ কুমারকে লেখা খোলা চিঠি টুইটারে পোস্ট করেন জেডিইউ-এর সাধারণ সম্পাদক পবন কে বর্মা। তাতে বিজেপিকে নিয়ে নীতীশের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত কথোপকথনও উল্লেখ করেছিলেন পবন। বিজেপির নীতি যে দেশের পক্ষে ক্ষতিকারক এবং তা যে দেশকে বিপজ্জনক পরিসরে নিয়ে যাবে, নীতিশ এমনটাই তাঁকে বলেছিলেন বলে দাবি করেন পবন। তিনি লেখেন, ‘নীতীশ ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমাকে বলেছিলেন, বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক বিপজ্জনক শক্তি। এর পরেও তিনি বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধলেন কী করে?’ পাশাপাশি তিনি নীতিশকে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘যখন আপনি ‘মহাগঠবন্ধন’-এর অগ্রভাগে ছিলেন, সে সময় প্রকাশ্যেই আরএসএস-মুক্ত ভারতের আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
এখানেই না থেমে তিনি এমনও দাবি করে যে, ‘আমার মনে আছে, একান্ত আলাপচারিতায় আপনি স্বীকার করেছিলেন, বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব কী ভাবে আপনাকে অপমান করেছিল…। এটাই যদি আপনার আসল মত হয়, তবে জেডিইউ কী করে বিহারের বাইরে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ছে, যখন তাদের অকালি দলের মতো তাদের দীর্ঘ দিনের জোটসঙ্গী তা করতে প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে।’ পবনের এই চিঠি প্রকাশ্যে আসামাত্রই চরম অস্বস্তিতে পড়ে নীতিশের দল। এ নিয়ে বিরক্ত স্বয়ং নীতিশও। তাঁর সাফ কথা, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। বিভ্রান্তির কোনও অবকাশ নেই। যদি কারও আপত্তি থাকে, তিনি যেখানে খুশি যেতে পারেন। আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’ পাশাপাশি নীতিশ এ-ও জানিয়ে দিয়েছেন যে, ‘যদি কারও কোনও বিষয়ে মতামত থাকে, প্রয়োজন হলে তা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। তবে এ ভাবে বিবৃতি দিয়ে নয়।’