জেএনইউ-এর পর ঠিক একইভাবে বুধবার রাতের অন্ধকারে শান্তিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেরুয়া তাণ্ডব। লাঠি, রড, উইকেট হাতে আচমকাই পড়ুয়াদের সিএএ-বিরোধী কর্মসূচীতে ঢুকে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। যাতে আহত হন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় এবং ফাল্গুনী পান নামে দুই পড়ুয়া। গতকাল রাতের বিশ্বভারতীর ঘটনায় এবার তীব্র নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার টুইট করে তিনি জানান, ‘এই ঘটনায় পুলিশকে দ্রুত এর অ্যাকশন নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। এবং কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করা হচ্ছে, ‘কালপ্রিট’দের দ্রুত সনাক্ত করে শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা নিক।’
উল্লেখ্য, হুবহু দিল্লীর জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গতকাল শান্তিকেতনের বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে মারধর-ভাঙচুর চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায়, ফাল্গুনী পান-সহ আরও অনেককে নির্মম ভাবে মারধর করে এবিভিপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। জানা গিয়েছে, বিশ্ব উপাচার্য যখন ক্যাম্পাসে ঢুকছিলেন, ঠিক সেই সময় দুষ্কৃতীদের বাইক ভিসির গাড়ির সঙ্গেই নাকি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। আক্রান্ত পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও তাঁদের ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতিরা।
শুধু তাই নয়। আক্রান্তদের পাশে যে সমস্ত শিক্ষকরা ছিলেন, তাঁরাও নিগ্রহের শিকার হন। অধ্যাপকদের লক্ষ করে চলে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি। আহত পড়ুয়া ফাল্গুনী পান জানান, ‘বুধবার রাতে হঠাৎই ক্যাম্পাসে ঢোকে ভিসির গাড়ি। সেই গাড়ির সঙ্গেই ছিল একাধিক বাইক, যাতে ছিল এবিভিপির সদস্যরা। রাত ১১টা নাগাদ বিদ্যাভবনের ছাত্রাবাসে বাঁশ, রড নিয়ে চড়াও হয়ে মারধর করতে থাকে আমাদের। হুমকি দেয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কেন প্রতিবাদ কর্মসূচী করছি আমরা। আমাদের হাসপাতালে আনা হলে সেখানেও ঢুকে এসে মারে।’
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই সিএএ-র বিরুদ্ধে দফায় দফায় বিক্ষোভ, মিছিল করছিলেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। এই অবস্থায় দিন কয়েক আগেই সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বিশ্বভারতীতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একটি আলোচনা সভায় যোগ দিতে গেলে তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখান ছাত্রছাত্রীরা। তার পরেও স্বপনবাবু ওই আলোচনায় অংশগ্রহণ করলে কালো পতাকা দেখানো হয় তাঁকে। সেই ঘটনারই ‘জবাব’ দিতে এই আক্রমণ বলে মনে করছেন অনেকে।