প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক স্বয়ং মহানুভবতা দেখাতে গিয়েছিলেন। শিখর ধওয়ন এবং কে এল রাহুল, দু’জনকেই দলে জায়গা করে দেওয়ার জন্য তিনি নিজে চার নম্বরে নেমে আসেন। মহানুভবতা যে ম্যাচ জেতায় না, জেতায় সঠিক রণনীতি, তা ওয়াংখেড়েতে দুরমুশ হওয়ার পরেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ভারত। প্রথম ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে অবশেষে শুভবুদ্ধির উদয় হল ভারতের। বিরাট ফিরছেন তিন নম্বরে।
ওয়াংখেড়েতে অস্ট্রেলিয়ার বেত্রাঘাতের পরে দ্রুতই সংশোধনের রাস্তায় হাঁটা শুরু করল ভারতীয় দল। প্রথমেই অধিনায়ক বিরাট কোহালিকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে তাঁর নিজের জায়গা, অর্থাৎ তিন নম্বরে। যা শুনে ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তরা হাঁফ ছেড়ে বলতে পারেন, যাক তা হলে শুভবুদ্ধির উদয় হল!
মঙ্গলবারই ওয়াংখেড়ের ড্রেসিংরুমে ফিরে ভারতীয় দলের অন্দরমহলে এ নিয়ে আলোচনা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে ফেরার জন্য কোনও ডিআরএসের প্রয়োজন হয়নি। সকলেই বুঝতে পারেন, কোহালিকে চারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল ‘ঐতিহাসিক ভুল’। রাজকোটে প্রথম কাজ হবে, অধিনায়ককে তিনে ফিরিয়ে আনা।
কোহলিকে তাঁর সেরা ফর্মে দেখতে গেলে যে তিন নম্বরেই যেতে হবে, তা নিয়েও কোনও সংশয়ের অবকাশ নেই। দল পরিচালন সমিতির এই ঘন-ঘন পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভ্যেসও অবিলম্বে ত্যাগ করতে হবে। মাত্র তিনটি এক দিনের ম্যাচ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই সিরিজে। বিশ্বকাপের পরে কার্যত এই প্রথম একটা ভাল সিরিজ হচ্ছে। সেখানেও পরীক্ষা করা কেন? তা-ও আবার কোহলির মতো দলের সেরা সম্পদকে নিয়ে! ওয়াংখেড়েতে খেলা শুরুর আগেই সেমসাইড গোল খেয়ে বসেছিল ভারতীয় দল।
যে আধিপত্য নিয়ে ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চরা মঙ্গলবার ভারতীয় বোলারদের উড়িয়ে দিলেন, তা দেখে কারও কারও মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া ‘মিশন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছে। কোহালিরা গত বছর অস্ট্রেলিয়া গিয়ে প্রথম বার টেস্ট সিরিজ জয়ের নজির সৃষ্টি করেছিলেন। তখন স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নার বল-বিকৃতির কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গিয়ে দল থেকে নির্বাসিত। ঘরের মাঠে অপমানের জ্বালা ফিরিয়ে দেওয়ার শপথ নিয়ে তাঁরা ভারতে এসে থাকলে, অবাক হওয়ার নেই। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের রিংটোনই হচ্ছে মেরুদণ্ড দেখানোর ক্রিকেট। ইয়ান চ্যাপেল টিনএজ বয়সে দীর্ঘকায় ফাস্ট বোলারকে খেলতে গিয়ে ভয় পেয়েছিলেন বলে ক্লাব দল থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক। কে সেই প্রধান নির্বাচক? না, তাঁর বাবা মার্টিন চ্যাপেল! বলাই হয়, ‘রুথলেস অসিজ’। নির্মম সেই রূপই দেখেছে ওয়াংখেড়ে।