প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফর ঘিরে তুমুল বিরোধিতার ঝড় উঠেছে, দলীয় পতাকা হাতে না নিয়ে কালো পতাকা উড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। প্রধানমন্ত্রী বেলুড় মঠে দাঁড়িয়েও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রচারের বিরুদ্ধেও উঠেছে তীব্র নিন্দার ঝড়। অনেক বিষয় নিয়ে কথা বললেও আসল কারণগুলিতে কোনও কথাই বলেননি বলেই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক বলেন, পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য আনুমানিক ৩০ হাজার কোটি টাকা দ্রুত বরাদ্দ করা, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে ৭ হাজার কোটি টাকা দেওয়া, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য তিন বছর আগে তিনি যে লোহার সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই সব জ্বলন্ত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর নজর দেওয়া দরকার ছিল। অথচ মনে হল, বিষয়গুলি তিনি পুরোপুরি ভুলে গিয়েছেন। এসব নিয়ে একটা কথাও কেন বললেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করাতে দেশের মূল সমস্যার কোনও সমাধান হবে না বলে কটাক্ষ তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের পর যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির টুইট খোঁচা, নাম বদলে সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হয় না। বরং বন্দর উন্নয়ন এবং জলপথ উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নিলে কর্মসংস্থান ও লগ্নির সুযোগ তৈরি হত। যা স্বামীজির জন্মদিনে বাংলার যুব সম্প্রদায়ের কাছে জাতীয় যুব দিবসের উপহার হত।
ডায়মণ্ডহারবারের সাংসদ জানিয়েছেন, “দিদি মানুষের প্রয়োজন এবং তিনি কতটা উদ্বিগ্ন তা জানানো সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনেক বিষয়ে কথা বললেও আসল কারণগুলি এড়িয়ে গিয়েছেন”।
তিনি আরও বলেন যে, “কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গের ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্য অর্থ বাকি আছে। ৭ হাজার কোটি টাকা বুলবুলে ক্ষতির জন্য পাওনা আছে। তিনবছর আগে প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন গঙ্গাসাগরে লোহার ব্রিজ তৈরি করে দেবেন। এইরকম বহু ইস্যু রয়েছে যেদিকে প্রধানমন্ত্রীর নজর দেওয়া প্রয়োজন। এই কথাগুলো তাঁর বক্তব্য থেকে সম্পূর্ণ বাদ রয়েছে”।
অভিষেক একই সঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্যের সঙ্গে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের সঙ্গে পার্থক্য করারও অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্য এবং অবিজেপি দল শাসিত রাজ্যের মধ্যে তিনি সব সময় বৈষম্য করেন কেন? কেন, পশ্চিমবঙ্গের মতোই, অবিজেপি দল শাসিত সব ক’টি রাজ্যকে এই উদাসীনতা সহ্য করতে হবে?